তুহিন সারোয়ার
সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
ঢাকা: বাড়ির ছাদে উঠলে মাথা খারাপ হবার যোগাড়। আমি কি বাংলাদেশে আছি?? নাকি ভিনদেশে? যার যা খুশি তাই করে যাচ্ছে। কেউ উড়াচ্ছে ব্রাজিলের পতাকা, কেউবা আর্জেন্টিনার, কেউবা জার্মানির, কেউবা ইতালি’র। পতাকা উড়ানো থেকে বাদ নেই রিকশাও। আর পতাকা উড়ানোর দৌড়ে পিছিয়ে নেই প্রাইভেট কারগুলোও। দুর থেকে দেখে মনে করতে পারেন- হঠাৎ দেশে সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সংখ্যা এত বাড়লো কিভাবে? কিন্তু কাছে গেলে অবাক হবেন। পতাকা দণ্ডে ঝুলছে ব্রাজিল কিংবা আর্জেন্টিনার পতাকা! পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে বিদেশী পতাকা উড়ানোর এমন রাষ্ট্রদ্রোহী নজির আছে কিনা তা আমার জানা নাই, যদিও বাংলাদেশের আইন অনুসারে বিদেশী পতাকা উড়ানোতে রয়ে গেছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু তারপরও প্রশাসন অন্ধ হয়ে আছে। সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে যাচ্ছে।
বিশ্বকাপ ফুটবলের নাম দিয়ে সারা দেশে উড়ছে বিদেশী পতাকা, যেন বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে ভিনদেশে।
দেশের আইন অনুযায়ী তা স্পষ্ট নিষিদ্ধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ, কিন্তু তারপরও প্রশাসন তা দেখেও না দেখার ভান করছে।
স্বাধীন দেশে অবাধে ভিনদেশের পতাকা উড়ানো কোনো সভ্য জাতির লক্ষণ হতে পারে না
আসুন দেখি, বাংলাদেশে বিদেশী পতাকার ব্যবহারের নিয়মাবলী কি:
বাংলাদেশ পতাকা আইন ১৯৭২ অনুসারে-
(১) বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনৈতিক মিশনসমূহের চ্যান্সারী ভবন এবং কনস্যুলার অফিসসমূহে বিদেশের ‘জাতীয় পতাকা’ উত্তোলন করা যাইতে পারে। অধিকন্তু, কূটনৈতিক মিশনসমূহের প্রধানগণ তাহাদের সরকারী ভবন এবং মোটর গাড়িতে তাঁহাদের ‘জাতীয় পতাকা’ উত্তোলন করিতে পারিবেন।
(২) বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় ভ্রমণকালীন সময়ে নিম্নবর্ণিত শ্রেণীর বিদেশী ব্যক্তিগণ তাহাদের নিজস্ব পতাকা (Personal Standards) অথবা নিজস্ব পতাকা না থাকিলে তাহাদের দেশের জাতীয় পতাকা তাহাদের অফিসিয়াল বাসভবনে এবং মোটর গাড়িতে উত্তোলন করিতে পারিবেন:
(ক) রাষ্ট্রপ্রধান;
(খ) ভ্রমণরত প্রধানমন্ত্রী;
(গ) বিদেশী সরকারের মন্ত্রীবর্গ।
(৩) বাংলাদেশে অবস্থিত কূটনৈতিক মিশনসমূহ কোনো উপলক্ষে, যেমন- জাতীয় দিবসসমূহে কূটনৈতিক মিশন প্রধানের বাসভবন বা চ্যান্সারী ব্যতীত, যে স্থানে সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হইবে, সেইস্থানে তাহাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করিতে পারিবে, তবে শর্ত থাকে যে, সেইক্ষেত্রে বাংলাদেশের ‘পতাকা’ও সম্মানজনক স্থানে পাশাপাশি উত্তোলন করিতে হইবে।
নোট: উপরিউক্ত বিধিতে উল্লিখিত সুবিধাদি কেবলমাত্র সেই সকল দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে, যাহারা পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকেও অনুরূপ সুবিধা প্রদান করিবে।
(৪) উপরিউক্ত বিধিসমূহের বর্ণনা ব্যতীত, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সুনির্দিষ্ট অনুমোদন ব্যতীত, বিদেশী রাষ্ট্রের পতাকা কোনো গাড়িতে বা ভবনে উত্তোলন করা যাইবে না।
পতাকা আইন অমান্য করে যারা বিদেশী পতাকা উড়াচ্ছে শাস্তিস্বরূপ তারা ১ বছরের কারাদ- বা ৫০০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
উল্লেখ্য, কিছুদিন পূর্বে সরকার একটি নির্দেশনা জারি করেছে যে, বাংলাদেশী কোনো নাগরিক বিদেশী পতাকা নিয়ে মাঠে যেতে পারবেন না। তবে অন্য দেশের নাগরিকরা তাদের নিজেদের দেশের পতাকা নিয়ে ঢুকতে পারবেন।
ফেইসবুক থেকে সংগ্রীহিত