শেষ মুহূর্তের পশুর হাট, ক্রেতা বেশি দামে ভাটা

Slider সারাদেশ


ঢাকা: শেষ মুহূর্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে রাজধানীর কোরবানির পশুর হাট। গত কয়েকদিনের ঝিমিয়ে পড়া দৃশ্য গতকাল চোখে পড়েনি। ক্রেতা বাড়ার কারনে গরু-খাসির বিক্রিও বেড়েছে। পছন্দমতো কোরবানির পশু কিনে ক্রেতারাও খুশি। তবে শেষ বেলায় পশুর দাম কিছুটা কমে গেছে। এবার গরুর হাটগুলোতে চমক হিসেবে দেখা গেছে বিভিন্ন দাম ও সাইজের পশু।
এগুলো সবাই না কিনলেও এক নজর দেখার জন্য ভিড় করতে দেখা যায় অনেককে।

রাজধানীর মেরাদিয়া মৌজার হাট ও আফতাব নগর হাট ঘুরে দেখা গেছে, দুদিনের আগের চেয়ে ক্রেতার ভিড় বেশি। সোমবার সন্ধ্যার চিত্র ছিল এমনই। সকালের দিকে হাটগুলো ক্রেতাশূন্য থাকলেও দুপুরের পরপর হাটের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। নানা প্রান্ত থেকে হাটগুলো ক্রেতারা এসেছেন পছন্দের পশু কিনতে। আর বিক্রেতারাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বেচাকেনায়। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর এলাকা থেকে ২২টি গরু নিয়ে আফতাবনগর হাটে এসেছেন শাওন মজুমদার। এরমধ্যে তিনি সবচেয়ে বড় গরুটির দাম হাঁকছেন এক লাখ ১০ হাজার টাকা। তবে ক্রেতারা ৬০ থেকে ৭০ হাজারের বেশি দাম বলছেন না বলে জানালেন তিনি। শাওন বলেন, আমার সবচেয়ে বড় গরুডার দাম যা কইতাছে, তাতে আমার চালানও উঠব না। আর অন্যগুলার তো কোনো দামই কইতাছে না। তয় গরুগুলার দাম না পাইলে দরকার অইলে ফেরত নিয়া যামু। তাও লসে গরু বেচুম না।

শামীম হোসেন নামের বেসকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এক ক্রেতা জানালেন, গরুর দাম গত দুদিন বেশি থাকলেও আজ কিছুটা কমেছে। এর আগে এসে ফিরে গিয়েছি। তবে আজ কিনেই বাসায় ফিরব। মেহেরপুরের গাংনি থেকে মেরাদিয়া হাটে ২২টি গরু নিয়ে এসেছেন মহিন ব্যাপারী। তিনি সবচেয়ে বড় গরুটির দাম চাইছেন দেড় লাখ টাকা। তবে কেউ এক লাখের উপর বলছেন না বলে জানালেন তিনি। মহিন বলেন, হাটে কোন কাস্টমার আজকে বেশি। একটা গরু বেচলাম ৮০ হাজার টাকায়। বাকিগুলা আইজ কাইলের মধ্যে বেচা হইয়া যাইবো। আফতাবনগর হাটের ১৪ নম্বর কাউন্টারের দায়িত্বরত মোস্তফা জামান সোহেল বলেন, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার শুরুতে গরুর বিক্রি কম ছিল। তবে আজ দুপুরের পর থেকে গরুর দাম যেমন কমছে, ক্রেতাও বাড়ছে। এ ধারা আজও অব্যাহত আছে।

হাট ঘুরে দেখা গেছে, এবারের কোরবানির হাটে দেশীয় গরুর সংখ্যাই বেশি। ক্রেতাদের কাছে দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে। তবে ভারতীয় গরুও রয়েছে।

এদিকে ঝিনাইদহের শৈলকূপা থেকে গাবতলী হাটে গরু বিক্রি করতে আসা ব্যাপারি হাসমত বলেন, চার দিন ধরে গাবতলী হাটে আছি। প্রথম ধাপে আনা ১৫টি গরুর মধ্য থেকে তার ১০টি গরু বিক্রি হয়েছে। মহিষের ব্যাপারি কুষ্টিয়ার আফজাল বলেন, দুই গাড়ি মহিষ এনেছি। গতকাল পর্যন্ত ১৭টি বিক্রি হয়েছে। গরু ব্যবসায়ী আফসার আলী বলেন, ৩০ বছর ধরে গাবতলী হাটে কোরবানির পশু বিক্রি করছি। গড়ে ৫০ থেকে ৬০টি গরু বিক্রি হয়। গত চার দিনে তিন লাখ টাকা দরে সাতটি কোরবানির গরু তিনি বিক্রি করেছেন।

রাজধানীর তেজগাঁও তিব্বত এলাকার হাটে গিয়েও দেখা যায় সেখানে ক্রেতাদের প্রচুর সমাগম। কিছুক্ষণ পরপর ট্রাকভর্তি গরু প্রবেশ করতে দেখা গেছে হাটটিতে। তবে এ হাটে গরুর দাম কিছুটা বেশি বলেই জানান ক্রেতারা। আসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, অনেক দূর থেকে গরু কিনতে এসেছি। কিন্তু দাম ছাড়ছে না বেপারীরা। ৯০ হাজার টাকা দিয়ে গরুটি কিনলাম। পশুর হাটগুলোতো পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তারা সন্তুষ্ট। আজ শেষ দিন পর্যন্ত এ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *