মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের মতো স্পেনেও মঙ্গলবার উদযাপিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা। স্পেনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে কয়েক দিন আগে থেকেই।
রাষ্ট্রীয়ভাবে স্পেনে ঈদের বিশেষ কোনো প্রস্তুতি কিংবা সরকারি ছুটি না থাকলেও মুসলমান প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে ঈদকে ঘিরে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
স্পেনে প্রকাশ্যে কোরবানি দেয়ার অনুমতি নেই। যারা এখানে কোরবানি দিতে চান, তাদের গ্রোসারি দোকানগুলোর শরণাপন্ন হতে হয়। মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায় বাংলাদেশি গ্রোসারি কয়েকটি দোকানে কোরবানির অর্ডার নেয়া হচ্ছে।
মাদ্রিদে এমনই একটি দোকানের স্বত্ত্বাধিকারী জাকির হোসেন বলেন, আমরা কোরবানির জন্য কেবল খাসির অর্ডার নিয়েছি। মাংস সরবরাহকারী একটি আরবী কোম্পানি খাসিগুলো কোরবানি দিয়ে আমাদের এখানে নিয়ে আসবে। গ্রাহকের কাছ থেকে প্রতি খাসি বাবত মূল্য নেয়া হচ্ছে ১৫০ ইউরো।
এদিকে, বাঙালি নারীরা ঈদের খাবারের বিশেষ রেসিপি তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাঙালি গ্রোসারি দোকানগুলোতেও তাই ঈদের খাবার তৈরির রসদ কিনতে আসা প্রবাসীদের ভিড় বাড়ছে।
বিশেষ করে সেমাই-এর চাহিদা বেশি বলে জানালেন মাদ্রিদে গ্রোসারি শপের একজন স্বত্ত্বাধিকারী।
মাদ্রিদের একটি গ্রোসারি দোকানে ঈদের বাজার করতে আসা জেসমিন আক্তার জানান, দেশের মতো আনন্দঘন পরিবেশে এখানে ঈদ করার সুযোগ নেই। তারপরও এই প্রবাসে ঈদকে নিয়ে আনন্দ আর প্রস্তুতির কমতি থাকে না। ঘরেই আমরা সেমাই, পিঠাসহ বাঙালি খাবার তৈরি করি।
দেশে পরিবার পরিজনের কাছে অর্থ পাঠিয়েছেন অনেকেই। বাঙালি মানি ট্রান্সফারের দোকানগুলোতে কিছুদিন ধরে প্রবাসীদের ভিড় লেগেই ছিল।
বার্সেলোনায় ডট মিডিয়া মানিট্রান্সফার এর স্বত্ত্বাধিকারী আফাজ জনি বলেন, প্রতিবছর দুই ঈদেই প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স পাঠান। আর সে কারণেই আমাদের ব্যস্ততাও বেশি।
মাদ্রিদের একটি মানি ট্রান্সফার দোকানে দেশে অর্থ পাঠাতে আসা হুমায়ূন করিব রিগ্যান বলেন, দেশে মা-বাবা, ভাই-বোনরা যদি আনন্দে ঈদ কাটায়, সেটাই আমার আনন্দ। দেশে কোরবানি আর ছোট ভাই বোনদের ঈদের জামা কাপড় কেনার টাকা পাঠাতে এসেছি।
স্পেনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিরা যে শহরগুলোতে থাকেন, সেখানে ঈদের নামাজের সময়সূচিও নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজধানী শহর মাদ্রিদের বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা লাভাপিয়েস সংলগ্ন কাসিনো পার্কের খোলা ময়দানে সকাল ৮টা ও ৯টায় ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া পর্যটনগরী বার্সেলোনায় বাংলাদেশি মসজিদ শাহ জালাল জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টা, ৮টা ও ৯টায় তিনটি জামাত এবং লতিফিয়া ফুলতলী জামে মসজিদে সকাল ৭টা ৪০, ৮টা ২০ ও ৯টায় তিনটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো প্লাজা মাকবার খোলা ময়দানে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের একটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে।