চট্টগ্রাম: ‘লুকলুকি’ একটি মিষ্টি ও সুস্বাদু দেশীয় ফল। দেখতে আঙ্গুর ফলের মত। এ ফলটিতে রয়েছে প্রচুর টসটসে পানি। তাই স্থানীয় ভাষায় এর নাম ‘পাইন্ন্যাগুলা’। বৈজ্ঞানিক নাম Fiacoartia Gargomaj. ইংরেজিতে একে বলে Coffee Plant. পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া এই ফল অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। পাকা পাইন্ন্যাগুলা ফল লাল টুকটুকে, তবে কিছুটা বেগুনি রঙ্গেরও ছোপ রয়েছে। কামড় দিলেই যেন রসে ভরা স্বাদ। আঙ্গুর ফলের মতো এর বর্ণ ও আকার। ভেতরে ৫-৬টি খুবই ছোট বীজ থাকে। যে একবার এর স্বাদ নিয়েছে, তিনি বার বার খেতে চাইবেন। ছোট ছেলে মেয়ে ও মহিলাদের কাছে পাইন্ন্যাগুলা খুবই প্রিয় খাবার। তবে সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ না থাকায় এ ফল গাছ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, পাইন্ন্যাগুলা ফলে রয়েছে শতকরা ৬০ ভাগ আয়রন। সালফার ফসফেট ছাড়াও ১০ ভাগ রয়েছে ভিটামিন ‘সি’। অন্যান্য উপাদানও রয়েছে সমভাবে। পাইন্ন্যাগুলা ফল খেলে হজমশক্তি ও লিভারের কার্যকরিতা বৃদ্ধি পায় এবং হৃদরোগীদের জন্য এটি উপকারী ভেষজ ঔষধের কাজ করে। তাছাড়া এর পাতা ও ফল ডায়রিয়া রোগের প্রতিরোধক। শুকনো পাতা ব্রংকাইটিস রোগের জন্য বিশেষ উপকারী। এর শিকড় দাঁতের ব্যাথা নিরাময়ে কাজ করে। পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাড়াছড়ি ছাড়াও চট্টগ্রামের পটিয়া, বোয়ালখালী ও চন্দনাইশের পাহাড়ি ভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে এ ফলের গাছ জন্মায়। বছরের মে মাসের শুরুতে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। জুলাই মাসের মাঝামাঝি পাইন্ন্যাগুলা ফল পাকা শুরু হয়। তখন এখানের বিভিন্ন হাটবাজারে সচরাচর বিক্রি হয়ে থাকে এই ফল। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই ফল চাষে এখনো কেউ এগিয়ে আসেনি।
মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীরা বাগান মালিকদের কাছ থেকে ফলগুলো সংগ্রহ করে দেশের সমতল অঞ্চলে নিয়ে বিক্রি করে থাকেন। তবে কিছু কিছু বাগান মালিক নিজেরাই হাট বাজারে পাইন্ন্যাগুলা বিক্রি করেন। বর্তমানে এ ফল বাজারে প্রতি কেজি ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”
সংগ্রহে ও সংকলণেঃ ফারজানা.