বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমী ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের ১১ দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এমনকি তার কোন সন্ধানও দিতে পারেনি।
এদিকে স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে হারিয়ে বাবা ইউনুছ আলী ও মা স্বপ্না বেগম পাগলপ্রায়। কিছুতেই পরিবারটির কান্না থামছে না।
গত ২৮ জুলাই বিদ্যালয়টির প্রধান ফটকের সামনে থেকে ওই ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার রাতেই ৫ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত এজাহার দেন অপহরণ হওয়া ওই ছাত্রীর মা স্বপ্না বেগম। কিন্তু ঘটনার প্রায় তিনদিন পর মামলা রেকর্ড করা হয়। পুলিশের এই রহস্যজনক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগীর পরিবার। তারা বলেন, ঘটনার পর থেকে থানা পুলিশের কাছে বার বার ধর্না দেয়া হলেও আসামিদের গ্রেফতার কিংবা মেয়েকে উদ্ধারের কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না পুলিশ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের মহিপুর জামতলা গ্রামের ইউনুছ আলীর স্কুল পড়ুয়া মেয়ে (১৩) প্রতিদিনের মতো গত ২৮ জুলাই বিদ্যালয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। একপর্যায়ে স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে পৌঁছলে সেখানে আগে থেকেই ওৎ পেতে থাকা রুবেল আলমের নেতৃত্বে তিন-চার ব্যক্তি জোরপূর্বক ওই ছাত্রীকে একটি সিএনজি চালিত অটোরিকসায় তুলে বগুড়া শহরের দিকে নিয়ে যায়।
এরপর থেকে সে নিখোঁজ রয়েছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার কোন সন্ধান না পেয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের অপহরণ ও সহায়তার অভিযোগ এনে একটি মামলা করা হয়।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার মহিপুর জামতলা গ্রামের মৃত রজিব উদ্দিন মন্ডরের ছেলে রুবেল আলম (৩২), তার ভাই সোহেল রানা (২৬), দানিছ প্রামাণিকের ছেলে আব্দুল মান্নান (৫২) ও রুবি বেওয়া (৫০)। মামলার বাদী মোছা. স্বপ্না বেগম জানান, তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে রুবেল উত্যক্ত করে আসছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সমাধানের চেষ্টা করা হয়। এমনকি আর কোন দিন এ ধরণের কাজ করবে না মর্মে অঙ্গীকার করে রুবেল আলম। কিন্তু বেশ কিছুদিন নিরব থাকলেও আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠে। এমনকি তার মেয়েকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বগুড়ার শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) বুলবুল ইসলাম জানান ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে পুলিশের কোন গাফিলতি বা অবহেলা নেই। তাদের অবস্থান জানার জোর চেষ্টা চলছে। এক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তিরও সাহায্য নেয়া হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই মেয়েটিকে উদ্ধারসহ ঘটনায় জড়িতদের ধরা সম্ভব হবে ।