বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ীদের ফাঁসি ও নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবিতে টঙ্গীর কলেজগেট এলাকায় অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা সরে গেছেন। এখন তারা উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে টঙ্গীর কলেজগেট এলাকা ছাড়েন তারা।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে টঙ্গী কলেজগেট এলাকায় অবস্থান নেয় টঙ্গী সরকারি কলেজ, শফিউদ্দিন সরকার একাডেমি কলেজ ও পাইলট স্কুল অ্যান্ড গার্লস কলেজের শিক্ষার্থীরা। জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাস দুটির চালকের ফাঁসির দাবিতে শ্লোগান দেন। এবং নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করেন।
সড়ক দুর্ঘটনার আইন করে দায়ী চালকদের যেন মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয় সেই আইন করার দাবি জানান তারা। এছাড়া গতকাল শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানানো হয় বিক্ষোভ থেকে। পরে টঙ্গী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী মঞ্জুর সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করার আহ্বান জানিয়ে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করেন। কিছু সময় পর শিক্ষার্থীরা সেখানে থেকে সরে উত্তরার দিকে রওনা হন।
এদিকে সড়কে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কারণে ওই এলাকায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে বিপাকে পড়েন মানুষ। পরে সড়কে থেকে শিক্ষার্থীরা সরে গেলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে টঙ্গীর সড়কে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ গণপরিবহনের সংখ্যা ছিল অনেক কম। মাঝে মাঝে দুই/একটি বাস আসলেও তাতে যাত্রীতে ঠাসা। দরজায় একটু জায়গা ফাঁকা দেখলেই সেখানে উঠতে হুমড়ি খাচ্ছেন অনেক যাত্রী। দু’একজন উঠতে পারলেও বাকি সবাইকে যেতে হচ্ছে হেঁটে বা রিকশায়। এজন্য গুণতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।
গত রবিবার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনের বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। আহত হয় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
দুই সহপাঠী নিহতের জেরে সেদিনই সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। পরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে তারা সেখান থেকে সরে গেলেও খিলক্ষেত এলাকায় বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে।
এক পর্যায়ে ঘাতক চালকের মৃত্যুদণ্ড ও নিরাপদ সড়কসহ নয় দফা দাবি দিয়ে তারা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো আজও রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এর ফলে রাজধানীতে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে।