সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন কেন্দ্রে কেন্দ্র ভোট গণনা চলছে।
বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া উৎসাহ-উদ্দীপনা আর উৎসবমুখর পরিবেশে আজ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ব্যালট ছিনতাইয়ের অভিযোগে দু’টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। কেন্দ্র দুটি হলো- নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের শাহগাজী সৈয়দ বোরহান উদ্দিন (রহ.) মাদ্রাসা (১১৬) ও ২৭ নং ওয়ার্ডের হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৩৪)।
শাহগাজী সৈয়দ বোরহান উদ্দিন (রহ.) মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ২ শত ২১ জন ও হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৫ শত ৬৬ জন ভোটার ছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দিনভর নির্বাচনে জালভোট দেয়া, এজেন্টদের বের করে দেয়াসহ নানা অভিযোগ করেছেন।
এছাড়াও ভোট বাতিল করে পুনঃনির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী, জামায়াতের প্রার্থী অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও সিপিবি-বাসদ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবু জাফর।
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তাদের অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। সেখানকার নির্বাচন নিয়ে বিএনপির করা অভিযোগ সুনির্দিষ্ট নয় এবং দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপির অভিযোগ সুনির্দিষ্ট নয়। যাদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে, তারা এজেন্ট কি না সেটাও দেখার বিষয়। পরিচয়পত্র না থাকলে তাদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়।
এই নির্বাচনে মেয়র এবং কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিলিয়ে মোট ১৯৬ জন প্রার্থী নির্বাচনের চূড়ান্ত লড়াইয়ে মাঠে রয়েছেন। মেয়র প্রার্থী ৭ জন, ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১২৭ জন কাউন্সিলর এবং ৯টি সংরক্ষিত আসনে ৬২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদরউদ্দিন আহম্মদ কামরান (নৌকা), বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন খান (হাতপাখা), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের-বাসদ মো. আবু জাফর (মই) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এহসান মাহবুব জোবায়ের (টেবিল ঘড়ি), মো. এহসানুল হক তাহের (হরিণ) ও মো. বদরুজ্জামান সেলিম (বাস)।
এবার মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন ভোটার রয়েছেন। সিটির ২৭টি ওয়ার্ডের ১৩৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮০টিকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করা হয়েছে। নগরীর ২৭টি টি ওয়ার্ডের ৯২৬ টি ভোট কক্ষ। এরমধ্যে দুটি কক্ষে ইভিএমের সাহায্যে ভোটগ্রহণ করা হয়।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান জানিয়েছেন- কিছুটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি আরও জানান- তিন হাজার পাঁচশ’ পুলিশ, দুই হাজার চারশ’ আনসার, সাড়ে তিনশ’ র্যাব ও ১৬ প্লাটুন বিজিবি নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। প্রতিটি কেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসারদের সমন্বয়ে ২২ সদস্যের টিম সার্বক্ষণিক নিয়োজিত করা হয়েছে।