সামাজিক মাধ্যমগুলোতে মত প্রকাশের নামে রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর প্রচারণা চলছে এবং ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের মারাত্মক অপব্যবহার হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্যের (ইউকে) একটি সংসদীয় কমিটি।
দেশটির সংসদের ডিজিটাল, কালচার, মিডিয়া অ্যান্ড স্পোর্টস (ডিসিএমএস) কমিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো বিভ্রান্তিকর তথ্য ও বানোয়াট সংবাদ পর্যবেক্ষণের পর ইউকে সরকারকে এই সতর্কবার্তা দিয়েছে।
সামাজিক মাধ্যমের ওপর চলমান পর্যালোচনার প্রথম প্রতিবেদনে সামাজিক মাধ্যমগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছে ডিসিএমএস কমিটি।
সামাজিক মাধ্যমের পাগলা ঘোড়ার লাগাম টানতে কয়েকটি নিয়ন্ত্রণমূলক পরামর্শ দিয়েছে এই কমিটি
সামাজিক মাধ্যমকে দায় নিতে হবে
ফেসবুক, ইউটিউবে মতপ্রকাশের নামে নানারকম ক্ষতিকর বিষয় পোস্ট করা হয়। কিন্তু ফেসবুক, ইউটিউবের দাবি তারা এসবের জন্য দায়ী নয়, তারা কেবল এসব পোস্ট প্রকাশের মাধ্যম মাত্র। তবে কমিটির নিয়ন্ত্রণ আরোপের সুপারিশে প্রতিষ্ঠানগুলোর এরকম গা-বাঁচানো কথাকে পাত্তা দেয়া হয়নি।
নিজ নিজ প্ল্যাটফর্মে পোস্ট হওয়া ক্ষতিকর লেখা, ছবি, ভিডিও, অডিওসহ সব কিছুর দায়ে ফেসবুক, ইউটিউবকেও দায়ী করার পরামর্শ দিয়েছে কমিটি।
রাজনৈতিক প্রচারণা বিধিমালাকে ডিজিটাল যুগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে
বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমের প্রচার-প্রচারণা নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে দেখা যাচ্ছে। প্রচারণা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসায় নির্বাচনী আইন-বিধিমালাতেও সংস্কার এবং আপডেট আনা দরকার। এজন্য রাজনৈতিক প্রচারণা কে চালাচ্ছে তা সবার জানার ব্যবস্থা করা, নির্বাচনে সামাজিক মাধ্যমে অসাধু চক্রের তৎপরতার জন্য সংশ্লিষ্ট সামাজিক মাধ্যমকে দায়ী করা এবং নির্বাচনী প্রতারণার জন্য জরিমানার পরিমাণ বৃদ্ধি করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
সরকারের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের প্রশিক্ষণ ও কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সামাজিক মাধ্যমগুলোর কাছ থেকেই অর্থ আদায় করা সামাজিক মাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক প্রতিষ্ঠানকে অনেক কর্মীকে নিয়ে কাজ করতে হবে।
এজন্য যে অর্থ লাগবে সেটা বহনের দায় সামাজিক মাধ্যমগুলোকেই নিতে হবে। অর্থাৎ সামাজিক মাধ্যমগুলোর জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে হবে সামাজিক মাধ্যমগুলোকেই। এসব অর্থ সাধারণ জনগণের মধ্যে সামাজিক মাধ্যম সচেতনতা এবং বানোয়াট সংবাদ বিষয়ে শিক্ষাদান কাজেও ব্যবহার করতে বলেছে কমিটি।
ঘৃণা ছড়ানো, রাষ্ট্র বিরোধী এবং জঙ্গিবাদে টানার ভিডিও সম্প্রচারের অভিযোগ রয়েছে সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং সাইট ইউটিউবের বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের শীর্ষে থাকা ফেসবুক।
এরপর ফেসবুকের আরেক কলঙ্ক হয়ে সামনে আসছে কেমব্রিজ এনালিটিকার কাছে লাখ লাখ ব্যবহারকারীর তথ্য পাচারের অভিযোগ। এখন দেখা যাক যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে ক্ষমা প্রাথর্না, ইউরোপে জবাবদিহির পর যুক্তরাজ্যে কিভাবে চাপ সামলান জাকারবার্গ।