ইন্দোনেশিয়ার বেশিরভাগ কারাগারের অবস্থাই শোচনীয় এবং জনাকীর্ণ। কিন্তু এবার জানা গেল টাকা দিলে কারাগারে মিলছে বিলাসী জীবনযাপনের ব্যবস্থা।
আর এমন অবৈধ সুযোগ দেয়ার দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন কারাগারের কর্মকর্তারা।
শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ, টেলিভিশন, বড় ফ্রিজ, নিজস্ব বাথরুম, শুনে কারাগার তো নয়ই, মনে হতে পারে হোটেলের বর্ণনা।
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভার সুকামিসকিন কারাগারে পাওয়া গেছে এমন ‘হোটেল’। কারাগারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পয়সাওয়ালা এবং প্রভাবশালী বন্দিদের বিলাসবহুল দ্রব্য সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ এই সুবিধা দিতে বন্দিদের কাছ থেকে ১৯ থেকে ৩৫ হাজার ডলার ঘুষ নেয়ারও প্রমাণ মিলেছে।
এমনকি, এসব বন্দিদের কিছু ক্ষেত্রে কারাগারের চাবিও সরবরাহ করা হয়, যাতে তারা নিজেদের ইচ্ছেমতো আসা যাওয়া করতে পারেন।
দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থা ‘ইন্দোনেশিয়ান করাপশন ইরাডিকেশন কমিশন’ (কেপিকে) ২২ জুলাই অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন বন্দি ও কারাগার কর্মকর্তাকে আটক করেছে।
কেপিকে মুখপাত্র ফেবরি দিয়ানশা বলছেন, তারা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ওয়াহিদ হুসেনকে ঘুষ দেয়া-নেয়ায় ব্যবহৃত অর্থ ও কিছু যানবাহন জব্দ করেছেন। কেপিকের হাতে আটকদের মধ্যে আছেন হুসেনও।
তিনি জানান, কেপিকের তদন্তকারীরা প্রায় ২০ হাজার ডলার সম-মূল্যের নগদ ইন্দোনেশিয়ান রূপাইয়া, কেনা-কাটার কাগজ, গাড়ির রসিদ এবং দুটি গাড়িও জব্দ করেছেন।
অভিযানে কিছু কক্ষ খুলতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তদন্তকারীদের, কারণ সে কক্ষগুলোর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল বন্দিদের হাতেই।
সুকামিসকিন একটি বিশেষ কারাগার, যেখানে মূলত দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সাবেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের রাখা হয়।
শুধু বিলাসী কক্ষই নয়, সুকামিসকিন কারাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কিছু বন্দিকে বিশেষ সুযোগ দেয়ার অভিযোগও আছে।
ইন্দোনেশিয়ার টেম্পো ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়, ওই কারাগারের কিছু বন্দিকে পাহারা ছাড়াই বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হতো। এমনকি সুকামিসকিন কারাগার কর্তৃপক্ষের সম্মতিপত্র নিয়ে কোনো কোনো বন্দি শুধু আত্মীয়-স্বজনের সাথে দেখাই না, শপিংও করতে যেতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
২০১০ সালে দেশটির বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত সাবেক কর কর্মকর্তা গায়ুস তাম্বুনানকে বালির এক রিসোর্ট দ্বীপে আন্তর্জাতিক টেনিস টুর্নামেন্টে খেলা দেখতে দেখা যায়। সূত্র: ডয়চে ভেলে।