জাতিসংঘসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো সিআইসহ সংশ্লিষ্ট মার্কিন প্রশাসনের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন সিনেট দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর বিরুদ্ধে বন্দি স্বাক্ষীদের জিজ্ঞসাবাদ চলাকালীন তাদের ওপর ‘ভয়াবহ বর্বরতার’ চরিতার্থ করার তথ্য প্রকাশ করার পর, এ আহ্বান জানায় প্রতিষ্ঠানগুলো।
জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, মার্কিন রাষ্ট্রনীতির উচ্চ পর্যায়ে স্বচ্ছতাকে পরিপূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠা করা জরুরী। প্রতিষ্ঠানটির মানবাধিকার ও সন্ত্রাসবিরোধী অধিদপ্তরের বিশেষ দূত বেন এমারসন বিষয়টি নিয়ে আরও পেছনের দিকে আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ এ ব্যাপারে প্রধান নীতিনির্ধারক হিসেবে কাজ করেছিলেন এবং পুরো বিষয়টিই আইনী পদক্ষেপের আওতায় নিয়ে আসা উচিৎ। সিআইএর ‘ওয়াটারবোর্ডিং’ এর মতো বর্বর নির্যাতনগুলোয় দায় মার্কিন প্রশাসনও এড়াতে পারে না।
ওয়াটারবোর্ডিং জিজ্ঞাসাবদকালীন পরিচালিত এ যাবতকালীন আবিষ্কৃত নিষ্ঠুরতম প্রক্রিয়াসমূহের একটি। দেখতে সাধারণ হলেও এর প্রভাব মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে খুব সহজে। এ প্রক্রিয়া বন্দিকে হাত পা বেঁধে মুখে ওপর একটা কাপড় ফেলে নাক ও মুখ বরাবর লাগাতার পানি ঢালা হয়। এটি মূলত স্পেনীয় নির্যাতন পদ্ধতি।
মার্কিন সিনেট ইন্টেলিজেন্সের এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে সিআইএ। বিশেষ করে ৯/১১ এর পরবর্তীসময়ের কর্মপন্থা সম্পর্কে তাদের ভাষ্য, বর্বরতা নয়, বরং তারা জীবন বাঁচানোর জন্যে কাজ করেছে।সিনেট কমিটি ৬০০০ পৃষ্ঠার দলিল তৈরি করেছিল। এখনও পর্যন্ত ৫২৫ পৃষ্ঠার সারবস্তু উপস্থাপিত হয়েছে।
প্রভাবশালী মার্কিন সিনেট জন ম্যাককেইন মনে করেন, নিষ্ঠুর প্রক্রিয়ায় জিজ্ঞাসাবাদ ভালো চেয়ে খারাপটাই ডেকে আনে। এর মাধ্যমে সত্য ভাষ্য তুলে আনার উদাহরণ খুবই কম। ৯/১১ ’র মতো সংবেদনশীল বিষয়ে এ পদ্ধতিকে এগোনো ছিল দুর্বলতম পদক্ষেপ, যার ফল এখনও বহন করতে হচ্ছে, আগামীতেও বহন করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়া নিষ্ঠুরতম নির্যাতন পদ্ধতি কাগজে কলমে নিষিদ্ধ করেছেন, এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দাও জ্ঞাপন করেছেন তিনি।