পর পর তিনবার পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়ায় কোলকাতার এক গৃহবধূকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন জোর করে রেখে এসেছিল সোনাগাছির যৌনপল্লীতে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করার পর পুলিশ এখন এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এই গৃহবধু অভিযোগ করছেন, শ্বশুরবাড়ীর লোকজন তার গর্ভে কন্যা সন্তান হবে বলে আশা করেছিলেন। তারা চেয়েছিলেন কন্যা সন্তান বড় হলে তাদের যৌন পেশায় নিয়োজিত করে উপার্জন করা যাবে। কিন্তু তৃতীয়বারও পুত্র সন্তানের জন্ম হওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে যৌনপল্লীতে রেখে আসে।
কোলকাতার পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি এবং উদ্ধার পাওয়া গৃহবধুর কাছ থেকে এই চাঞ্চল্যকর কাহিনী জানা গেছে।
কোলকাতায় বিবিসি বাংলার অমিতাভ ভট্টশালী এই গৃহবধুর সঙ্গে কথা বলেন। তিরিশ বছর বয়সী তিন সন্তানের জননী এই মহিলা জানিয়েছেন, তার শ্বাশুড়ি এবং ননদসহ শ্বশুরবাড়ীর অন্তত পাঁচ জন মহিলা যৌন পেশায় জড়িত। তবে বিয়ের আগে পর্যন্ত এই বিষয়টি স্বামী তার কাছে গোপন রেখেছিলেন। তাদের আদি বাড়ী মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলায়। তবে বহু বছর ধরে কোলকাতাতেই থাকেন।
তিনি জানিয়েছেন, পর পর পুত্র সন্তানের জন্ম দিতে থাকায় শ্বশুর বাড়ীতে তাকে নানা রকম নির্যাতন-লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। তের মাস আগে তৃতীয় বার পুত্র সন্তান হওয়ার পর এর মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
কয়েকদিন আগে শ্বশুরবাড়ীর লোকজন তাকে জোর করে কোলকাতার যৌনপল্লী সোনাগাছিতে রেখে আসে। সেখান থেকেই দুর্বার মহিলা সমিতি তাকে উদ্ধার করে।
ভারতে পুত্র সন্তানের আশায় বধু নির্যাতনের ঘটনা অহরহই ঘটে। অনেক পরিবারেই কন্যা শিশুকে অবাঞ্ছিত হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু পুত্র সন্তান জন্ম দেয়ায় নির্যাতিত হওয়ার এই ঘটনা একেবারেই অভিনব। –
পুত্র সন্তান জন্ম দেয়ায় গৃহবধূকে যৌনপল্লীতে প্রেরণ
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন