কোটা সংস্কার আন্দোলনে আহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী তরিকুল ইসলাম তারিকের শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। আর কয়েকদিন পরে তরিকুল ক্রাচে ভর দিয়ে একটু হাঁটা-চলাও করতে পারবে।
গত ৯ জুলাই তারিকের পায়ে অস্ত্রপচার করার পর বর্তমানে তার অবস্থা ভালোর দিকে। তরিকুল বর্তমানে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
তরিকুলকে ঢাকায় নিয়ে আসা তার বন্ধু মঞ্জুরুল আলম জানান, ১১ জুলাই রাজধানীর একটি হাসপাতালে এই অপারেশন করা হয়েছে। আর এখন সেই পায়ে তীব্র ব্যাথা রয়ে গেছে। লাঠির আঘাতে ওর হাতের মাংসগুলো ফুলে আছে। কোথাও কোথাও রক্ত জমাট হয়ে আছে। সেখানে ‘ঘা’ হয়ে গেছে। যেগুলো শোকাতে আরো সময় লাগবে। মেরুদণ্ড, কোমর ও পায়ের জন্য থেরাপি দেওয়া হচ্ছে।
তরিকুলকে কোথায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, সেটা প্রকাশ না করার কারণ জানতে চাইলে ঢাকায় নিয়ে আসার বন্ধু মঞ্জুরুল আলম বলেন, তাহলে আমাদেরকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বের করে দেবার কারণ কি? আমরা কি বড় অপরাধী ছিলাম?’
তরিকুলের বন্ধু বলেন, ‘ওর শারীরিক অবস্থা তেমন ভালো না। যে পা ভেঙে গেছে সেটা ভীষণ ব্যাথা করে। কোমড়ে যে হাতুড়ি পেটা হয়েছিল সেটার কারণে উঠতে বা বসতে পারে না। কোন কিছু খেলে সাথে সাথে বমি করে। ডাক্তাররা বলছে সব কিছু ঠিক হতে এখনও দুই সপ্তাহ লাগবে। ’
তবে তরিকুলের কোমড়ের হাড় ভাঙেনি বলে ডাক্তাররা নিশ্চিত করেছেন বলেও জানান তার সেই বন্ধু। তিনি বলেন, যেখানে হাতুড়ির আঘাত লেগেছে সেটা নিয়ে এক ডাক্তার বলেছিল ফেঁটে গেছে হাড়। তবে ঢাকায় আসার পর ডাক্তার বলেছে তেমন কোন সমস্যা নেই।
মঞ্জুরুলজানান, এখন পর্যন্ত তার বন্ধুর চিকিৎসা চলছে দানের টাকায়। কিন্তু তারা আর কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষক টাকার বিয়ষটি এখন দেখাশোনা করছেন। তবে এখনও হাসপাতালের বিল পরিশোধ করা যায়নি।
তিনি জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ, পঞ্চাশ টাকা করে দিচ্ছে তাই দিয়ে চলছে; বিশেষ কেউ দিচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথম দিকে সাপোর্ট দিতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা আর দেইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ভিসি বা ছাত্র উপদেষ্টারা তো আমাদের অভিভাবক। তারা একবার ফোন দিয়েও জানতে চায়নি তরিকুল কেমন আছে। ’
মঞ্জুরুল আরও জানান, ‘ওর পরিবারের অবস্থা তেমন ভালো না, ও কৃষক পরিবারের ছেলে। পরিবারের পক্ষে সেভাবে সম্ভব হচ্ছে না চিকিৎসার খরচ বহন করা। তাই আমরাও ওর পরিবারকে চাপ দিচ্ছি না। পায়ের অপারেশনে অনেক কিছু দরকার ছিল। ডাক্তাররা টাকা ছাড়া অপারেশন করতে চাইছিল না। পরে আমরা বলেছি অপারেশন করেন আমরা টাকা যেভাবে হোক জোগাড় করব।