প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে গ্রেফতার করা হয়নি। রাজনৈতিকভাবে গ্রেফতার করতে চাইলে তাকে ২০১৪-২০১৫ সালেই গ্রেফতার করাতে পারতাম। বেগম জিয়া এতিমদের টাকা আত্মসাতের দায়ে দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কারাগারে বন্দি। আর এটা হয়েছে কোর্টের রায়ে। এখানে আমাদের তো কোনও হস্তক্ষেপ নেই। এখানে তো কোনও রাজনীতিও নেই। দুর্নীতির সাজা ভোগ করছেন তিনি।’
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার (১১ জুলাই) জাতীয় সংসদে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গ্রেফতার ও সাজা প্রসঙ্গে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বেগম জিয়ার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একজন নারী হয়ে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করার কথা চিন্তাও করা যায় না। ‘এতিমের টাকা মেরে খাওয়ার কারণে’ বিএনপি চেয়ারপারসন আজ ‘নারী জাতির কলঙ্ক’। আমাদের নারী জাতির জন্যও এটি লজ্জার। কারণ, একজন নারী মানে একজন মা। একজন মা হয়ে এতিমের টাকা কী করে চুরি করে বা অপব্যবহার করলেন তিনি!’
খালেদা জিয়ার মামলা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১০ বছর মামলা চললো। মামলা চালালেন বিএনপির জাদরেল জাদরেল আইনজীবী ও ব্যারিস্টার সাহেবরা। কেউ তো প্রমাণ করতে পারেননি তাদের নেত্রী নির্দোষ। দোষী প্রমাণ হওয়ায় তার সাজা হয়েছে। এখানে তো রাজনীতির কিছু নেই।’
সামাজিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ক্ষেত্রসহ সমাজের সব ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকার কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নারীসমাজের উন্নয়নে সরকারের এই কার্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে।’
দেশে সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় থাকলে দেশও এগিয়ে যায়- এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসতে পেরেছি বলেই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রাখতে পেরেছি। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকুক তা আমরা চাই। তবে তার জন্য বর্তমান গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের সরকারের সময়কালে গত ৯ বছরে ৬ হাজারের বেশি নির্বাচন হয়েছে। কোথাও তো কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনও প্রশ্ন তুলেনি! কেউ তো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে শুনিনি। বিএনপির আমলে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের কথাও আমাদের মনে আছে। তখন ভোটারবিহীন নির্বাচন করে অনেককে নির্বাচিতও ঘোষণা করে দেয়া হয়েছিল।’
এর আগে সংরক্ষিত আসনের নূরজাহান বেগমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের মেয়াদে (২০০৯-১৭) ১ কোটি ৮৫ লাখ ৪০ হাজার ৫৯ জন শিক্ষার্থীকে ৩ হাজার ৪৪৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা উপবৃত্তি দেয়া হয়েছে। শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।