ইতিহাসে ফরাসি বিপ্লবে পতন হয়েছিল বাস্তিল দুর্গের। আর শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ব সাক্ষী থাকল এক অন্য ফরাসি বিপ্লবের।
যেখানে পতন হল আর্জন্টিনার। স্বপ্নভঙ্গ মেসির।
সম্প্রতি বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নের কথা জানিয়েছিলেন মেসি। তিনি বলেন, আমি বিশ্বকাপ না জিতে অবসর নিতে চাই না। এই কথা থেকেই অনেক কিছু বোঝা যায়। আর্জেন্টিনার জন্য বিশ্বকাপ কেমন তা এটা থেকেই বুঝে নেওয়ার কথা। আমার জন্যও তাই। বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন আমার মধ্যে সব সময়ই ছিল। শিরোপাটা জয়ের অনুভূতি কেমন আমি তা ছুঁয়ে দেখতে চাই।
কিন্তু সেটা আর হলো। মাঝ পথেই পতন ঘটল নক্ষত্রের। যার হাতে কাপ দেখার স্বপ্নে বুঁদ ছিল গোটা দুনিয়া, সেই মেসি আর বিশ্বকাপেই নেই। সেই মেসি জ্বলে ওঠার আগেই নিভে গেলেন। সেই মেসি আজ দেশের জার্সি গায়ে আরও একবার ব্যর্থ। সেই মেসি আজ হেরে গেলেন একজন ফুটবলার, অধিনায়ক এবং সর্বোপরি একজন আর্জেন্টাইন নাগরিক হিসেবে। জীবনের কোনও পর্বে এসে ঈশ্বরকেও হয়তো পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়। আর সেই পরীক্ষাতেই এদিন মাথা নত হল ফুটবল ঈশ্বরের। ভক্তকূলের দীর্ঘদিনের প্রার্থনায়, প্রত্যাশায় ছেদ টানলেন এলএম টেন।
চারটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়েও নক-আউটে কখনও গোলের দেখাই পাননি আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। সমর্থকদের জন্য সান্ত্বনা পুরস্কারও যে রইল না। মার্কাডোকে দিয়ে একটা গোল করালেন। কিন্তু তা তো যথেষ্ট ছিল না মেসির জার্সি গায়ে ফুটপাতে শুয়ে থাকা সেই ছেলেটার জন্য। যে ঈশ্বরের বাঁ-পায়ের শটের অপেক্ষায় ছিল।
দ্বিতীয়ার্ধে মেসির গোলমুখী শটও তো পারল না নীল-সাদা জার্সি গায়ে তোলা ওই সমর্থকদের চোখের জল আটকাতে। আজ তো গোটা আকাশ যেন ভেঙে পড়ল মাথার উপর। হাজার গঞ্জনা, হাজার অপমান সহ্য করেও যে ভক্তদের বিশ্বাস ছিল, দেশকে ঠিক ট্রফি এনে দেবেন মেসি। তাদের তো আর তর্ক করার কিছু রইল না। একরাশ শূন্যতাই দিয়ে গেলেন মেসি। নিজেকে ও তার ভক্তদের।