আমেরিকার বিরোধিতা সত্ত্বেও পাশ্চাত্যের সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা রক্ষার লক্ষ্যে একটি প্যাকেজ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা ফেডেরিকা মোগেরিনি শুক্রবার রাতে এ খবর জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ২৮ জাতির ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সবগুলো দেশের শীর্ষ নেতাদের ভোটে এ প্যাকেজ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। শুক্রবার ব্রাসেলসে ইইউ’র শীর্ষ নেতাদের দু’দিনব্যাপী বৈঠকের শেষদিন এ ভোটাভুটি হয়।
ফেডেরিকা মোগেরিনি জানান, আগামী দু’দিনের মধ্যে প্যাকেজ প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপের পক্ষ থেকে ইরানের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ২০১৫ সালে ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের পরমাণু সমঝোতা স্বাক্ষরে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছিলেন মোগোরিনি। তিনি শুক্রবারের ভোটাভুটির পর জানান, বুলগেরিয়া প্রথমে ইরানকে দেয়া প্যাকেজ প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেও শেষ পর্যন্ত এটির পক্ষে রায় দেয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবটি গৃহিত হয়।
ইরানের পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী তিন দেশ ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানী এই প্যাকেজ প্রস্তাব তৈরি করেছে। সম্প্রতি আমেরিকা একতরফাভাবে এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ওই তিন দেশ এটি রক্ষা করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতি দেয়। এসব দেশ ইরানকে একটি প্যাকেজ প্রস্তাব দেয়ার কথা উল্লেখ করে আরো জানায়, আমেরিকা বেরিয়ে যাওয়ার কারণে ইরান যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
সম্প্রতি ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাকচি জানিয়েছেন, পরমাণু সমঝোতায় ইরানের স্বার্থ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চলতি জুন মাসের শেষ নাগাদ ইউরোপীয় ইউনিয়ন তেহরানকে একটি প্যাকেজ প্রস্তাব দেবে।
ইরান ওই প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখার পর পরমাণু সমঝোতায় থাকা বা না থাকার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলেও তিনি জানান।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮ মে ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে তার দেশকে বের করে নিয়ে ঘোষণা করেন, আগামী তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহাল করা হবে। একইসঙ্গে তিনি এ সমঝোতা মেনে না চলতে ইউরোপীয় দেশগুলোকে উসকানি দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।