যেখানে কুমিরের পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ায় শিশুরা!

Slider বিচিত্র

crocodile-2

বিশ্বাস করা কঠিন হলেও, এমনটাই ঘটে চলেছে পশ্চিম আফ্রিকার বুরকিনা ফাসো-য়। দেশের রাজধানী শহর ওইগাডোগো থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে বাজুলা নামে একটি ছোট্ট গ্রাম। এ গ্রামে রয়েছে একটি হ্রদ, যেখানে বাস করে ১০০রও বেশি কুমির। আর সেই ভয়ঙ্কর জীবের পিঠে চড়েই কিনা ঘুরে বেড়ায় ছোট ছোট শিশুরা! তাদের পাশে পাশেই সাঁতার কাটে গ্রামের বড়রা।

সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই কুমিরদের সঙ্গেই এক অদ্ভুত সখ্য রয়েছে গ্রামের মানুষের। এবং গ্রামবাসীদের মতে, এই বন্ধুত্ব চলে আসছে ১৫ শতক থেকে। কথিত, কোনও এক সময়ে বাজুলায় প্রবল খরা দেখা দেয়। মানুষ যখন জলকষ্টে ভুগছিলেন, তখন গ্রামের মহিলাদের একটি গুপ্ত জলাশয়ের কাছে নিয়ে যায় এই কুমিররা।

তারপর থেকে প্রতি বছর ‘কুম লাকরে’ নামে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গ্রামবাসীরা। হ্রদের কুমিরদের খাওয়ানো হয় অনেক কিছু, যাতে তারা গ্রামবাসীকে আশীর্বাদ করে সুখ-সমৃদ্ধির জন্য। গ্রামবাসীরা মনে করেন, এই কুমিরের মধ্যেই রয়েছে তাদের পূর্বপুরুষের আত্মা। যে কারণে, কোনও কুমিরের মৃত্যু হলে, মানুষের মতোই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করে গ্রামবাসীরা।

বুরকিনা ফাসোর কুমির-মানুষের এই অসম বন্ধুত্ব দেখতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা। স্থানীয় গাইড রাফায়েল কাবোরের কথায়, বছরে এখন প্রায় পাঁচ হাজার পর্যটক যান পশ্চিম আফ্রিকার এই গ্রামে। কিন্তু তিনি মনে করেন, সংখ্যাটা ১০ হাজার ছুঁতে পারে। রাজনৈতিক কারণেই পর্যটকরা এখানে আসতে ভয় পান।

এ ছাড়া রয়েছে প্রকৃতির রোষ। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে কুমিরের সেই হ্রদও। মানুষ-বন্ধুদের বাঁচাতে তারা কি আবারও সন্ধান দেবে সেই গুপ্ত জলাশয়ের!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *