গাজীপুর সিটিতে ভোট ডাকাতির মহোৎসব, অভিনব কৌশলে মিডিয়াকে ফাঁকি দেওয়ার মাধ্যমে ব্যাপক অনিয়ম, বিএনপি দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টদেরকে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসী কর্তৃক মারধর , হুমকি ও গ্রেফতার, হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনার মাধ্যমে শেষ হয়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। গত ১৫ মে এই নির্বাচন সংগঠিত হওয়ার কথা থাকলে ও আদালতের নির্দেশনায় স্থগিত হয়ে আবার সিডিউল অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হলো এ নির্বাচন।
সকাল ৭.৩০ থেকেই বিএনপি দলীয় এজেন্টদেরকে কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়া শুরু হয়। তারপর সকাল ৮.০০টায় ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পরই একের পর এক শুরু হয় অনিয়ম ও কারচুপি। বিএনপি মিডিয়া সেলে তাদের কেন্দ্র প্রতিনিধিদের মাধ্যমে আসতে থাকে অভিযোগ।
কেন্দ্র দখলের দৌড়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের চেয়ে এগিয়ে আছে পুলিশ। গাছা এলাকার প্রায় সব কেন্দ্রই দখলে নেয় বেলা ১১.০০টার মধ্যে। শরীফপুর দাখিল মাদ্রাসা, জিয়াস খান উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় কেন্দ্রেই পুলিশ বিএনপি দলীয় এজেন্টদেরকে পিস্তল ঠেকিয়ে উঠিয়ে নিয়ে হদিস পাওয়া যাবেনা বলে হুমকি দিয়ে বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মোগরখাল কেন্দ্রে ভোট শুরু হওয়ার আড়াই ঘন্টার মধ্যেই ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ।
নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালট পেপারের ছবিও ইতোমধ্যে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় কাজী আজিম উদ্দিন কলেজ কেন্দ্রে এরশাদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা এজেন্ট বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মারার সময় বৈশাখী টিভির প্রতিনিধির কাছে রেকর্ডসহ ধরা পড়ে। সদর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শহীদ স্মৃতি স্কুল কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়ম, ভোট ডাকাতি ও সিল মারার প্রতিবাদ করতে গিয়ে সাবেক সর্বোচ্চ ভোট প্রাপ্ত কাউন্সিলরকে বেধরক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বডার গার্ড বাংলাদেশ এর সদস্যরা। ঐ কেন্দ্রে একবার সাতটি ব্যালট বইতে সিল মেরে বের হয়ে যায়, আবার দুপুরের পর এসে সিল মারে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। পূবাইল রহমানিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে মহিলা পুলিশ এজেন্টদেরকে বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মেরেছে। গতরাত থেকে নির্বাচন কমিশনকে বারবার অভিযোগ করার পরও নির্বাচন কমিশন গ্রেফতার ও হয়রানি না করার একটি চিঠি ইস্যু করা ব্যতীত আর কোন কার্যক্রকরী পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষমতা আছে বলে কোন দক্ষতা দেখাতে পারেনি।
পুলিশ হাইকোর্ট ও নির্বাচন কমিশনের কোন নির্দেশনাকে তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার অবব্যবহার কাকে বলে তার দৃষ্টান্ত রেখেছেন ধরপাকড় ও হয়রানির চরম পর্যায়ে পৌঁছে। ৩০ নং ওয়ার্ডে ভোট প্রদান করেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এড. জাহাঙ্গীর আলম। সকাল ৮টায় ভোট শুরুর কথা থাকলেও জাহাঙ্গীর আলম দেরিতে উপস্থিত হওয়ায় তিনি প্রথম ভোট দেবেন এই অযুহাতে এর আগে কাউকে ভ্টো দিতে দেয়নি আওয়ামী লীগের কর্মীরা। বিকাল ৩.৩০ টার সময় হাসান উদ্দিন সরকারের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন স্থগিত করার আবেদন রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন। এসব ব্যাপক অভিযোগের মাধ্যমেই বিকাল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষ করেন। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায় নির্বাচনী কাজে সম্পৃক্ত প্রিজাইডিং , সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসারগণ অসহায়ের মতো এই অনিয়ম ও কারচুপি দেখেছে; কিন্তু কোন প্রতিবাদ করতে পারেনি পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে। এতো অভিযোগের পরও কোন মিডিয়ার চোখে অনিয়ম ধরা না পড়ার অভিনব কৌশল হিসেবে দুই স্তরের সিকিউরিটি রেখে পূর্বে থেকেই ফিটফাট দেখানো হয়েছে। অবশেষে প্রায় ৪০০ কেন্দ্রে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মারার কৌশল গ্রহণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কাউলতিয়া ২১ নং ওয়ার্ড জহিরউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র পুলিশ এবং আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপি এর কোন এজেন্ট ভিতরে ঢুকতে দেয় নি।
২। ৩১ নং ওয়ার্ড ধীরাশ্রম রাতে প্রধান এজেন্ট এবং বিএনপি নেতা এড: মানিককে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। তার পর আমাদের বিকল্প এজেন্ট সেলিম রেজা দায়িত্ব পালন করতে গেলে ফিরোজ দারোগা এবং ডিবি পুলিশ তাকে ও ধরে নিয়ে যায়।
৩। ১১ নং ওয়ার্ড খোলাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র: ডিপি পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকে বিএনপির সিরাজুল ইসলাম সহ সকল এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়।
৪। মুন্সি পাড়া ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেসে সারা রাত বেলট পেপার ছাপিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে গেছে। তথ্য সূত্র জেলা বিএনপি বিজ্ঞান বিষয়ক সম্প্রাদক আনোয়ারুল ইসলাম।
৫। ৭ নং ওয়ার্ড দারুল উলুম মাদরাসা কেন্দ্র: বিএনপি এজেন্টদের কাছ থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এজেন্ট কার্ড ছিনিয়ে নিয়েছে।
৬। ৩০নং ওয়ার্ড বালুচাপলি কেন্দ্র: প্রধান এজেন্ট ফজলুল করিমসহ অন্যান্য এজেন্টদের পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে।
৭। ৩০নং ওয়ার্ড নীলের পাড়া কেন্দ্রে পুলিশ ঢুকে আধঘন্টার মধ্যে কেন্দ্র থেকে বিএনপির সকল এজেন্টদের বেড় হয়ে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছে।
৮। ৩০নং ওয়ার্ড কানাইয়া কেন্দ্রে আওয়ামী সন্ত্রাসীর বিএনপির কোন এজেন্টদের কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতে দেয় নাই।
৯। কলমেশ^র প্রাইমারি স্কুল কেন্দ্র বিএনপির ৭ জন এজেন্ট এর কাছ থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এজেন্ট কার্ড ছিনিয়ে নিয়েছে।
১০। ৫নং ওয়ার্ড বাগবাড়ী কেন্দ্র: পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হুমকি ধুমকি ও তা-ব চালাচ্ছে।
১১। ৪নং ওয়ার্ড সারদাগঞ্জ কেন্দ্রে পুলিশ বিএনপি এজেন্টদেরকে বের করে দিয়েছে।
১২। ২নং ওয়ার্ড লতিফপুর কেন্দ্র-এজেন্ট বের করে দিয়ে নুরুল হক মেম্বারের নেতৃত্বে সকাল থেকে ব্যালট পেপারে সিল মারছে।
১৩। জরুন ইসমাইল পাঠান একাডেমি কেন্দ্রের সকল এজেন্টদেরকে বের করে দিয়েছে।
১৪। ৮নং ওয়ার্ড পারিজাত কেন্দ্র ছাত্রদল নেতা হিমেলকে প্রচন্ড মারধোর করে ২২জন এজেন্টকে জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। হিমেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
১৫। কাশিমপুর ৬নং ওয়ার্ড পাইন শাইল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে।
১৬। লোহাকুর মাজার কেন্দ্র – এজেন্ট বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মারছে।
১৭। মেঘডুবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আওয়ামীলীগের শিরিশ চেয়ারম্যান সহ সন্ত্রাসীরা এজেন্টদেরকে বের করে দেয়ার জন্য বল প্রয়োগ করেছে।
১৮। ৩৫ নং ওয়ার্ড বায়তুস সালাম কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্ট কালা ইদ্রিসকে কেন্দ্রের ভেতর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
১৯। ২৬ নং ওয়ার্ড শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপারে সীল মারছে।
২০। অথেন্টিক আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দখল করে নৌকা প্রতীকে সিল মারছে।
২১। ভানুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের এজেন্টদেরকে হুমকি দিয়ে জোর করে বের করে দিয়েছে।
২২। কাশিমপুর ২নং ওয়ার্ড ভবানীপুর (চক্রবর্তী) কেন্দ্রের এজেন্টদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে।
২৩। ওয়ার্ড ১৪ বিডিপি স্কুল কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপারে সীল মারছে।
২৪। ২৮ নং ওয়ার্ড লাগালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপারে সীল মারছে।
২৫। ২৮ নং ওয়ার্ড হারিনাল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপারে সীল মারছে।
২৬। ৪৯ নং ওয়ার্ড এরশাদ নগর কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপারে সীল মারছে।
২৭। পূবাইল আদর্শ ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপারে সীল মারছে।
২৮। টঙ্গী নোয়াগাঁও শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপারে সীল মারছে।
২৯। কাশিমপুর বাগবাড়ী মাদ্রাসা ও সুরপাইল সর. প্রা. বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপারে সীল মারছে।
৩০। ১১ নং ওয়ার্ড জয়ের টেক সরকারি প্রা. বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে সকল এজেন্টকে বের করে দিয়ে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যালট পেপারে সীল মারছে।
৩১। গাছা ৩৪ নং ওয়ার্ড অনন্ত মডেল স্কুল, শরীফপুর দাখিল মাদ্রাসা , জিয়াস খান উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের পুলিশ এজেন্টদের কে পিস্তল ঠেকিয়ে বের করে দিয়ে ব্যালট পেপারে সিল মারছে।
৩২। সাবেক গাছা ইউনিয়নের সকল কেন্দ্র পুলিশ দখল করে সিল মারছে।
৩৩। পূবাইল রহমানিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে মহিলা পুলিশ সিল মারছে।
৩৪। ৪২ নং ওয়ার্ডের সকল কেন্দ্রের সকল এজেন্টদেরকে বের করে দিয়ে আনোয়ার মোড়লকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ।
৩৫। বাসন ১৪নং ওয়ার্ডের বাসন তৈজদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বিএনপির এজেন্ট আবুবকর সিদ্দিক রতনকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। এখনো তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা।
গত রাতে
১। শিমুলতলী কেন্দ্রের প্রধান এজেন্ট মোতালেবকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
২। লক্ষীপুরা কেন্দ্রের এজেন্ট আব্দুল আউয়ালকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
৩। ধীরাশ্রমের বিএনপি নেতা কেন্দ্রের প্রধান এজেন্ট এড. মানিককে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।
৪। টঙ্গীর ৫৫নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আব্দুস সাত্তারকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে ।
মিডিয়া সেল
ধানের শীষ