ভারতের গোয়ালিয়র পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়েও শেষ রক্ষা হল না সাজার মেয়াদ শেষ হওয়া এক বাংলাদেশি বন্দির। রবিবার দুপুুরে আহমেদ বক্স সিদ্দিকি ওরফে আল মাক্কি (৩৩) নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে হায়দরাবাদ থেকে আটক করেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশের পুলিশ।
ইতিমধ্যেই মাক্কিকে হায়দরাবাদ থেকে গোয়ালিয়রে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, তিন বছর আগে ভুয়া ভারতীয় নথি জোগাড় করে ভারতীয় মোবাইল সিম কেনার অভিযোগে গোয়ালিয়র শহর থেকে আটক করা হয় ঢাকার বাসিন্দা মাক্কিকে। তাকে আটকের পর তার কাছ থেকে একটি আই ফোন এবং ট্যাবলেটও বাজেয়াপ্ত করা হয়। পরে পুলিশি জেরায় সে জানায় আটক হওয়ার সাত মাস আগে ভারত-বাংলাদেশ অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে সে ভারতে প্রবেশ করে এবং গোয়ালিয়রে আসার আগে দিল্লি, চেন্নাইসহ বেশ কয়েকটি শহরে অবস্থান করেছিলেন ওই বাংলাদেশি নাগরিক।
মাক্কিকে আটকের পরই ১৪ ফরেনার্স অ্যাক্টসহ একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয় তাকে। এরপর আদালতের নির্দেশে তাকে পুলিশি রিমান্ডে পাঠানো হয়। এসময় তাকে মধ্যপ্রদেশ রাজ্য এবং কেন্দ্রের গোয়েন্দা এজেন্সিগুলির তরফে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরায় জানা যায়, ভারতে প্রবেশের কোন বৈধ নথিই ছিল না মাক্কির কাছে। এমনকি ভারতে প্রবেশের পর তার গতিবিধি বেশ সন্দেহ জনক ছিল বলেও জানতে পারে গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দাদের কাছে মাক্কি জানায়, ভারতে প্রবেশের আগে সৌদি আরবে থাকাকালীন সময়ে চুরির দায়ে এক বছরের কারাগারের সাজা ভোগ করতে হয়। এরপরই সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশ চলে যায় মাক্কি। পরে বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে। ভারতে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগে তার তিন বছরের সাজাও হয়। কয়েক সপ্তাহ আগেই গোয়ালিয়রের একটি কারাগার থেকে মুক্তি পায় মাক্কি। এরপর বাংলাদেশে প্রত্যাপণের বিষয়ে সমস্ত আনুষ্ঠানিকতার জন্য গোয়ালিয়র পদাভ পুলিশ থানার অধীন একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয় তাকে।
এরই মধ্যে গত ২০ জুন (বুধবার) দুই পুলিশ কনস্টেবলের প্রহরায় নামাজ আদায়ের জন্য ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে মাক্কিকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি মসজিদে। কিন্তু নামাজ আদায়ের ওই মসজিদ থেকেই পলায়ন করে মাক্কি। এরপরই সমস্ত থানায় সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। অবশেষে রবিবার মাক্কিকে হায়দরাবাদ থেকে আটক করা হয়।
গোয়েন্দাদের কাছে জেরায় মাক্কি এও জানায়, বাংলাদেশে তার অসুস্থ মা ও এক বোন রয়েছে এবং তারাই নিয়মিতভাবে তাকে ভারতে রুপি পাঠাতেন। গোয়ালিয়র পুলিশ মাক্কির বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ দায়ের করেছে এবং ওই অঞ্চলের সমস্ত থানায় সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়েছে।
গোয়ালিয়রের পুলিশ সুপার নবনীত ভাসিন জানান, ‘ডিনেটশন ক্যাম্প থেকে ওই বাংলাদেশি নাগরিকের পালিয়ে যাওয়ার পিছনে কি কারণ আছে তা জানতে তাকে নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তির জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে তার বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে’।