নারীর শিক্ষা, অধিকার ও দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানের অধ্যাপক মমতাজ বেগম ও গোলাপ বানুর হাতে চলতি বছরের বেগম রোকেয়া পদক তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই পদক বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
১৯৭২ সালের নারী পুনর্বাসন বোর্ডের সদস্য হিসাবে মমতাজ বেগম সারাদেশে ঘুরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত ও নির্যাতিত নারীদের পুনর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য (এমএনএ) হিসাবে দায়িত্ব পালন করা এই নারী ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদেরও সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ বেগমের জন্ম ১৯৪৬ সালের ১৩ এপ্রিল, কুমিল্লায়। ১৯৬২ সালের হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বাতিল আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের ১১ দফাসহ বিভিন্ন আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান মমতাজ শিক্ষকতা করেছেন ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে। এর আগে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি, নারী প্রগতি সংঘ, জাসদ, নৌ কমান্ডো ও নারী ফাউন্ডেশনের সম্মাননাও তিনি পেয়েছেন।
১৯৬৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্ম নেওয়া গোলাপ বানুর প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও সমবায় সমিতির মাধ্যমে তিনি নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে অসামান্য ভূমিকা রখেন।
কয়েকজন নারীকে সঙ্গে নিয়ে ১৯৯৬ সালে গোলাপ বানু বারিধারা মহিলা সমবায় সমিতি চালু করেন, যে সংগঠনের সদস্য সংখ্যা এখন ৩৬ হাজার ৬৭৩ জন।
সমবায়ের মাধ্যমে এ সমিতি গত ১৮ বছরে ১৪৪ কোটি টাকার পুঁজি গঠন করেছে।
গোলাপ বানুর উদ্যোগে এ সমিতির সদস্যদের শিক্ষা দিতে বর্তমানে ছয়টি স্কুলও পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া অসহায় ও দুস্থ মহিলাদের ধাত্রী সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখছেন তিনি।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সচিব তারিক-উল-ইসলাম।