বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবিতে ২০ জেলে নিখোঁজ

Slider গ্রাম বাংলা

211711_bangladesh_pratidin_traller_dubi

কক্সবাজারে বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে আরো দুটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে শনিবার রাত থেকে আজ রাত পর্যন্ত অন্তত ২০টি ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ জেলের মধ্যে আরো ১০ জেলেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সাগরে এখনো ২০ জনের বেশি জেলে নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। গত ৪ দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কক্সবাজারের মাতামুহুরী, বাকঁখালী ও রেজু নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মহেশখালী উপজেলার হোয়ানকে পাহাড় ধসে মো. বাদশা মিয়া (৩২) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে পানিরছড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মহেশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আবুল কালাম জানান, সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে টয়লেটে গেলে সেখানে পাহাড় ধসে পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

লঘুচাপের প্রভাবে শনিবার রাত থেকে কক্সবাজারের বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে ওঠলে মাছধরারত ফিশিং ট্রলারগুলো উপকূলে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে শুরু করে। কিন্তু উপকূলের কাছাকাছি বিভিন্ন মোহনায় এসে প্রচন্ড ঢেউয়ের ধাক্কায় ডুবে যায় অনেক ট্রলার। কিছু ট্রলার সৈকতে তীব্র ঢেউয়ের ধাক্কায় ভেঙ্গে যায়। এসময় দুর্ঘটনাকবলিত জেলেরা সাঁতার কেটে অথবা অন্য ট্রলারে উদ্ধার হয়ে কূলে ফিরতে সক্ষম হলেও এখনও অন্তত ২০ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানায় ট্রলার মালিক সমিতির নেতারা।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহামদ জানান, উপকূলে নিরাপদ আশ্রয়ে ফেরার সময় বঙ্গোপসাগরে দমকা হাওয়ার কবলে পড়ে গত ৩ দিনে ২০টি ফিশিং ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় অধিকাংশ জেলে অন্য ট্রলারে বা বিভিন্নভাবে উদ্ধার হয়েছে। গত কয়েকদিনে নিখোঁজ রয়েছে ২০ জেলে। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢলের পানিতে কক্সবাজারের মাতামুহুরী ও বাকঁখালী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মাতামুহুরী নদীতে লাকড়ি সংগ্রহের সময় এক যুবক ভেসে গেছে। এখনো তার সন্ধান মিলেনি।

উখিয়া উপজেলার জামতলী এলাকায় গাছ চাপা পড়ে এক রোহিঙ্গা যুবকের মৃত্যু হয়েছে। উখিয়া থানার ওসি মো.আবুল খায়ের বলেন, মঙ্গলবার সকালে ঝড়ো হাওয়ার সময় গাছ চাপা পড়ে রোহিঙ্গা যুবক মোহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়। তার লাশ উদ্ধার করে ক্যাম্পের একটি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অন্তত ৩ শতাধিক ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছেন, উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এতে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ১১৮ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *