যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন আগামীকাল মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরে আলোচনায় বসছেন। এরইমধ্যে দুই নেতাই সিঙ্গাপুর পৌঁছেছেন।
ট্রাম্প জি-৭ সম্মেলন শেষে কানাডায় ঘোষণা দিয়েছেন কিমকে তিনি একবারই সুযোগ দেবেন। এ বৈঠক ব্যর্থ হলে কিমের ক্ষতি হবে। তবে বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, বৈঠক ব্যর্থ হলে ক্ষতি হবে ট্রাম্পেরই।
দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের নেতৃত্বের সঙ্গে এরই মধ্যে দুবার করে বৈঠক করেছেন কিম জং উন। এ ছাড়া রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ উত্তর কোরিয়া ঘুরে গেছেন এবং উনকে রাশিয়া সফরের দাওয়াত দিয়ে দেশে ফিরেছেন। তিন সীমানা প্রতিবেশীর সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা এরই মধ্যে সীমান্ত অঞ্চলে জমি কেনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
ব্যস্ততা শুধু সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যেই নয়, সরকারি পর্যায়েও শুরু হয়ে গেছে। গত বৃহস্পতিবার উত্তর কোরিয়ার কায়েসংয়ে ও পরদিন শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে আলোচনায় বসেন দুই দেশের সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি উত্তর কোরিয়ার ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ সৃষ্টি করার কথা আর বলতে চান না।
কোরিয়া ন্যাশনাল ডিপ্লোমেটিক একাডেমির অধ্যাপক কিম হাইয়ুন উওক বলেন, ‘ট্রাম্পের (সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির) অভিযানের সমাপ্তি ঘটেছে। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কূটনীতির দ্বার উন্মুক্ত করার কারণে সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির অভিযানে এরই মধ্যে ভাটা পড়েছে। ’
ট্রাম্প চাইলেও আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবেন না বলে মনে করেন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা জোসেফ ইউন। তিনি বলেন, যখন প্রতিপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালাবেন, তখন তাদের ওপর সর্বোচ্চ চাপ বজায় রাখা বাস্তবে অসম্ভব। আপনারা একই সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং সর্বোচ্চ চাপ বজায় রাখতে পারবেন, আমার তেমনটা মনে হয় না।
দক্ষিণ কোরিয়া উত্তরের সঙ্গে পুনর্মিলন চায় বহুদিন থেকেই। দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন সেই প্রত্যাশাকেই যতটা সম্ভব এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। চীন কোরিয়া যুদ্ধের সময় থেকেই উত্তরের পক্ষে। আর রাশিয়াও এরই মধ্যে আভাস দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বদলে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে রাশিয়া তাতে যোগ দেবে না।
উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী দানদং শহরের হ্যাট বিক্রেতা ইয়াং জানান, এ শহরে জমির দাম সম্প্রতি বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় বিনিয়োগকারীরা যেভাবে বাণিজ্য বাড়ার সম্ভাবনার কথা ভাবছে, সেই ভাবনার প্রভাবেই এখানকার জমির দাম বাড়ছে।