ঈদের আগেও ভাল সার্ভিস পাচ্ছে না বিআরটিসির যাত্রীরা। সেই পুরানো আর লক্কর ঝক্কর মার্কা বাস দিয়েই বিআরটিসির যাত্রীরদের চলাচল করতে হবে দুর্ভোগ নিয়ে।
ঈদের আগে পরে সার্ভিস থাকলেও থাকছে না কোন মানসম্মত বাস, কোচ। পুরাতন আর এবড়ো থেবড়ো বাসগুলোই বগুড়া বিআরটিসির ভরসা। সে কারণে দিন দিন যাত্রী কমেছে কয়েকগুণ।
বিআরটিসি বগুড়া বাস ডিপো সূত্রে জানা গেছে, সরকার নিয়ন্ত্রিত বিআরটিসির পুরাতন বাসগুলো ঈদ উপলক্ষ্যে বগুড়া ডিপো থেকে সার্ভিস দিচ্ছে। তবে ঈদ উপলক্ষ্যে স্পেশাল কোন সার্ভিস নেই। যাত্রী সাধারণের জন্য বিআরটিসি বগুড়া ডিপোর আওতাধীন উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি রুটে ৫০ টি গাড়ী চলাচল করছে। কিন্তু বিআরটিসির এসব বাস ১৫ থেকে ২৫ বছরের পুরাতন। মাঝে ৩ থেকে ৪ বছর আগে কয়েকটি নতুন বাস দিলেও সেগুলোও থাকছে বিকল হয়ে। সেকারণে ওই বাসগুলো বগুড়া থেকে খুব কমই চলাচল করে।
অর্ধেকের বেশী বাস চলাচলের অনুপযোগি থাকলেও জোড়াতালি দিয়ে চলাচল করছে বাসগুলো। বিআরটিসির বাসগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক, সিট নষ্ট হয়ে পড়েছে। ময়লা, চিটচিটে, বাসের গায়ে দীর্ঘদিনের মাটি, কাঁদা, বালু পড়ে ময়লার স্তর জমে আছে। সিটের কাভার উঠে গেছে এমন সিটে বসতে চাইছে না যাত্রীরা।
যাত্রীদের অভিযোগ, এসব গাড়ী বিভিন্ন রুটে মাঝে মধ্যেই যাত্রী নিয়ে বিকল হয়ে পড়ে। তবুও ঈদের আগে ও পরে জোড়াতালি দিয়ে এসব বাস চালানো হচ্ছে বগুড়া থেকে উত্তরের সকল জেলায়। বিআরটিসির বাস ডিপোতে গত কয়েক বছরে নতুন বাস দেয়া হয়নি। তাই পুরাতন বাস দিয়েই চলছে যাত্রী চলাচল।
২০১০ সালের দিকে ঢাকা বগুড়া রুটে নতুন বাস নামানো হলেও ১২ সালের মধ্যে সেই বাসগুলোও বন্ধ হয়ে যায় নানা কারণে। তবে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ দাবী করছে, বাসগুলোতে যাত্রী না হওয়া ও প্রাইভেট বাস মালিকদের বাঁধার কারণে বাসগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এই রুটে এখন আর বাস চলছে না। অজ্ঞাত কারণে এই রুটের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
রাজশাহী, জয়পুরহাট, নওগাঁ চলাচল করা বাসগুলোতে যাত্রী তুলনামুলক পাওয়া গেলেও ঢাকাগামী যাত্রী খুবই কম। বাস ভাল না হওয়ার কারণে বাসের যাত্রী কমেছে। অথচ বাসগুলো একটু উন্নত, যাত্রী সেবার মান কিছুটা বাড়ালেই সরকার এখান থেকে লাভবান হতে পারে।
বগুড়া বিআরটিসি বাস ডিপোর কর্মচারিরা বলছেন, প্রাইভেট বাস মালিকদের প্রভাব ও বাধার কারনে দিন দিন রুট সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া দীর্ঘ দিন নতুন বাস সরবরাহ না থাকায় যাত্রীরা পুরাতন লক্কড় ঝক্কড় বাসে যাতায়াতে অনাগ্রহী হয়ে উঠেছেন। অপরদিকে প্রাইভেট বাস মালিকরা নিত্য নতুন এসি – নন এসি আরামদায়ক কোচ সার্ভিস চালুর কারনে বিআরটিসির সেবা দিন দিন নিচের দিকে যাচ্ছে।
বগুড়া থেকে ঢাকাগামী যাত্রী আরমাহ হোসেন জানান, তিনি ব্যক্তি মালিকানায় একটি বাসে করে ঢাকা যাচ্ছে। বগুড়া থেকে ঢাকাগামী বাস বিআরটিএ যায় কিনা সে বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে কেউ কিছু বলতে পারেনি। ঢাকায় বাস
বিআরটিসির বগুড়া বাস ডিপো ম্যানেজার (অপারেশন্স) মফিজ উদ্দিন বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে কোন আলাদা সার্ভিস নেই। কয়েক বছর দরে বন্ধ হয়ে আছে ঢাকা বগুড়া সরাসরি বাস চলাচল। বগুড়া থেকে ২১ রুটে ৫০ টি বাস চলাচল করছে। ঈদের ছুটিতেও বছরের অন্য সময়ের মতোই স্বাভাবিক সেবা দেয়া হবে যাত্রীদের। সরকার নতুন বাস ক্রয় করলে বগুড়ায় নতুন বাস পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি বলেন, বিআরটিসির বেশিরভাগ বাসই ঠিক রয়েছে। বাসের বডি দেখতে পুরাতন হলেও ইঞ্জিন এখনো বেশ ভাল রয়েছে।