ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ১৫ টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ১৬২২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। এ সংক্রান্তে জড়িত আসামী ডাঃ মোঃ জাহিদুল আলম কাদির ও তার স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে .২২ বোরের রাইফেল ৩টি, .৩০৩ রাইফেল-১টি, .৩২ বোর রিভলবার ৪টি, .২২ রিভলবার ১টি, ৭.৬৫ পিস্তল ৫টি ও .২৫ পিস্তল ১টি। উদ্ধারকৃত গুলির মধ্যে .৩০৩ রাইফেলের ১১০ রাউন্ড, .২২ রাইফেলের ১১০০ রাউন্ড, .৩২ রিভলবার ৩৫৮ রাউন্ড ও .২৫ পিস্তলের ৫৪ রাউন্ড ।
উল্লেখ্য যে, গত ১৫ মে’১৮ ইং তারিখ ডাঃ মোঃ জাহিদুল আলমকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা হতে ০২ টি পিস্তল এবং ০৮ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার হয়। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে রুজুকৃত মামলায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে গত ৩ জুন’১৮ তারিখ গাবতলী এলাকা হতে তার স্ত্রী মাসুমা আক্তারকে ০১ টি বিদেশী পিস্তল ও ০৪ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মাসুমা আক্তারকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার স্বামী ডাঃ জাহিদুল আলমের কাছে আরও অবৈধ বিদেশী অস্ত্রের মজুদের তথ্য জানতে পারলে পুনরায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ডাঃ জাহিদুল আলমের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অদ্য ৭ জুন’১৮ ইং তারিখ ভোর ০৪.০০ টায় ময়মনসিংহ জেলার বাঘমারা এলাকার ডাঃ মোঃ জাহিদুল আলম কাদির এর ফ্ল্যাট হতে ১২ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১৬১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি তার নিজ বাসায় বিশেষভাবে তৈরিকৃত একটি স্টীল কেবিনেটের পিছনে লুকানো ছিল।
আজ ৭ জুন’১৮ বেলা ১১টায় ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংয়ে এ সংক্রান্তে বিস্তারিত তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম-বার, পিপিএম-বার।
এ সময় তিনি জানান, ডাঃ জাহিদুল আলম ২০০২ সালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করার পর সরকারি বা স্থায়ী কোন চাকরি করত না। সে গ্রামের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চাকরি করত। সে চিকিৎসা পেশার অন্তরালে বিভিন্ন উৎস থেকে অবৈধভাবে লাইসেন্সবিহীন বিদেশী অস্ত্র সংগ্রহ করে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করত। সে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র তৈরী ও মেরামতে বিশেষভাবে পারদর্শী। এছাড়া বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে অস্ত্রের আকার আকৃতি পরিবর্তন এবং কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সে অনেক দক্ষ। পেশাদার কিলার হিসেবে সে বেশ কয়েক জায়গায় চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পূর্বেই তাকে গত মাসে গ্রেফতার করা হয়। আসামী ডাঃ জাহিদুল আলমের সাথে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সন্ত্রাসী এবং পেশাদার খুনিদের সখ্যতা ছিল।
তিনি আরো জানান, ডাঃ জাহিদুল বেশ কিছু অস্ত্র বৈধ অস্ত্র বিক্রেতার কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। যেসকল বৈধ অস্ত্র বিক্রেতা তার কাছে অবৈধভাবে অস্ত্র বিক্রি করেছে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।