কয়েকদিন পরেই মুখোমুখি হবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আর কিম জং উন। একজন উত্তর কোরিয়ার সর্বময় কর্তা, যার এক ইঁশারায় ফেটেছে একের পর এক পরমাণু বোমা। আর অন্যজন নিষেধাজ্ঞার পর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দমিয়ে দিতে চেয়েছেন সেই কিম জং উনকে। ঐতিহাসিক মুহূর্ত দেখার জন্য অপেক্ষায় অধীর গোটা বিশ্ব। আর এই দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠক ঘিরে থাকবে কড়া নিরাপত্তা। খুকরি হাতে পাহারা দেবেন গোর্খারা।
দুই নেতাই নিজেদের সিকিউরিটি টিম নিয়ে আসবে সিঙ্গাপুরে। এছাড়াও থাকবে সিঙ্গাপুরের এলিট পুলিশ বাহিনী। আর তার সঙ্গে থাকবে ‘গোর্খা কন্টিজেন্ট’। রাস্তা ও হোটেল ঘিরে থাকবেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
সাধারণ খুববেশি গোর্খা সৈন্যকে সিঙ্গাপুরে দেখা যায় না। তবে বৈঠকের প্রাক মুহূর্তে তাদের আনাগোনা বেড়েছে শহরের রাস্তায়। চলছে জোর প্রস্তুতি। কিছুদিন আগেই সিঙ্গাপুরের সাংরি লা হোটেলে বৈঠকে যোগ দিয়েচিলেন প্রধানমমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানেও নিরাপত্তায় রাখা হয়েছিল গোর্খা সেনাদের। বিশ্বের ভয়ঙ্করতম যোদ্ধাদের জন্য অন্যতম এই গোর্খারা।
সুদূর নেপাল থেকে গোর্খাদের নিয়ে এসেছে সিঙ্গাপুর পুলিশ। সশস্ত্র এই সেনাদের সঙ্গে থাকবে বেলজিয়ামের তৈরি FN SCAR অ্যাসল্ট রাইফেল আর পিস্তল। তবে সব আধুনিক অস্ত্র ছাড়াও তাদের সঙ্গে অবশ্যই থাকবে ‘খুকরি’। প্রচণ্ড ধারাল এই অস্ত্র গোর্খাদের ঐতিহ্য। গোর্খারা মানেন, এই খুকরি যদি খোলা হয় তাহলে তাতে যেন অবশ্যই রক্তের দাগ লাগে।
সিঙ্গাপুরের এক অধিকর্তা জানান, এই রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে গোর্খারাই নিরাপত্তার জন্য সেরা। এদের যে ট্রেনিং দেওয়া হয়, তাতে এরা যে কোনও ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারে বলেই মনে করেন তিনি। তবে ঠিক কত সংখ্যায় তাদের মোতায়েন করা হয়নি, সেটা স্পষ্ট নয়। সিঙ্গাপুর পুলিশে মোট ১৮০০ গোর্খা রয়েছে।
প্রায় ২০০ বছর ধরে ব্রিটিশ ট্র্যাডিশন মেনে নেপাল থেকে গোর্খাদের রিক্রুট করা হয়।
১২ জুন সিঙ্গাপুরে মুখোমুখি হবেন ট্রাম্প-কিম৷ উত্তর কোরিয়ার কোনও রাষ্ট্রনায়কের সঙ্গে এই প্রথম মুখোমুখি হবেন কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷
সিঙ্গাপুরে ঐতিহাসিক ট্রাম্প-কিম শীর্ষ সম্মেলন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বার বার অবস্থান বদল করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন৷ একটা সময় বৈঠক হবে কীনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন কূটনৈতিক মহল৷ কিন্তু উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পরই অবস্থান বদল করেন ট্রাম্প৷
এর পরই ঐতিহাসিক শীর্ষ সম্মেলনের তোড়জোড় শুরু করে দেয় হোয়াইট হাউস৷ শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা এই বৈঠকে যোগ দেব৷ এই বৈঠকের মধ্যে দিয়ে একটি প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছি৷’’ তবে তিনি জানিয়ে দেন বৈঠকে বসলেও দুই দেশের মধ্যে কোনও চুক্তি সাক্ষরিত হবে না৷