দালালকে টাকা দিয়ে স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় আসার পথে নদীতে ডুবে মারা যাওয়া বাংলাদেশি দুই তরুণের লাশ ১৭ দিন পর ১ জুন শুক্রবার রাতে টেক্সাস থেকে নিউইয়র্কে এলো। আগামীকাল রবিবার ব্রুকলিনে বাংলাদেশ মুসলিম সেন্টারে এদের জানাযার পর বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
নিউইয়র্কের মানবাধিকার সংস্থা ‘দেশীজ রাইজিং আপ এ্যান্ড মুভিং’(ড্রাম) এর কম্যুনিটি অর্গানাইজার কাজী ফৌজিয়া এ তথ্য জানিয়ে বলেন, টেক্সাসের মেডিকেল এক্সামিনারের প্রসেসিং সেন্টার থেকে লাশ উদ্ধার করতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হলো। কারণ, উভয়কেই বেওয়ারিশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টু এ সংবাদদাতাকে জানান, গত ১৪ মে শাহাদাত হোসেন নয়ন (১৮) ও মাইনুল হাসান হৃদয়(২১)’র লাশ টেক্সাস-মেক্সিকো সীমান্ত সংলগ্ন ওয়েব কাউন্টিতে রাইয়ো গ্র্যান্দে (Rio Grande river by Webb County) নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। দালালকে মোটা টাকা দিয়ে আরো কয়েকজনের সাথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা বিভিন্ন দেশ ঘুরে মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকালে করুণ মৃত্যুর শিকার হন। তাদের দুজনের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী ও বেগমগঞ্জ উপজেলায়। উভয়েই ছিলেন পিতা-মাতার একমাত্র পুত্র সন্তান।
জাহিদ মিন্টু জানান, ড্রামের সহায়তায় আমরা নোয়াখালী সোসাইটির ব্যবস্থাপনায় লাশ বাংলাদেশের নোয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।
ইমিগ্রেশন বিভাগ সূত্রে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে মেক্সিকো হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে শত শত মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছে। গত ৫ মাসে ৫ হাজারের অধিক ব্যক্তিকে সীমান্তরক্ষীরা গ্রেফতারে সক্ষম হন।
এর উল্লেখযোগ্য একটি সংখ্যা হচ্ছে বাংলাদেশি। তারা সকলেই নিজেদেরকে বিএনপির কর্মী দাবি করে এসাইলাম চেয়েছেন। কয়েকজন প্যারলে মুক্তি পেলেও অন্যরা টেক্সাস, ফ্লোরিডা, আলাবামা, আরিজোনা, সিনেসোটা এবং পেনসিলভেনিয়ার ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে ইমিগ্রেশন এটর্নী মঈন চৌধুরী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘বেআইনী পথে যুক্তরাষ্ট্রে আসার এমন ঝুঁকি কারোরই নেয়া উচিত নয়। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক মানুষ পানিতে ডুবে নয়তো বা গভীর জঙ্গলে হিংস্র প্রাণীর আক্রমণে জীবন হারিয়েছে।