যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্পের একটি ছবিকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ছবিটিতে দেখা যায়, নিজ সন্তানকে কোলে তুলে আদর করছেন মা ইভাঙ্কা।
ছেলেও আঁকড়ে রেখেছে মায়ের হাতটা। আর মা-সন্তান স্নেহের এই টুকরো মুহূর্তের ছবিই সমালোচনার ঝড় তুলেছে টুইটারে! কিন্তু কেন?
কারণ, দু’বছরের ছেলে থিওডোরের সঙ্গে ছবিটি পোস্ট করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প কন্যা ইভাঙ্কা। সমালোচকরা বলছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তে সীমান্তে শরণার্থী শিশুদের কেড়ে নেয়া হচ্ছে বাবা-মায়ের থেকে। আর ঠিক সেই সময়ই কোল-ছাড়া হওয়ার ভয় না থাকায় ট্রাম্পের অন্যতম উপদেষ্টা ইভাঙ্কা আদরে ভরিয়ে দিচ্ছেন তার নিজের সন্তানকে।
চলতি মাসে অনুপ্রবেশকারীদের ক্ষেত্রে আরও কড়া নীতি ঘোষণা করেছে মার্কিন প্রশাসন। যে নীতিতে বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরোলে ধরা পড়া মাত্র গ্রেফতার করা হবে অনুপ্রবেশকারীদের। সঙ্গে ছোট শিশু থাকলেও এর অন্যথা হবে না। ইভাঙ্কা নিজে তার বাবার অন্যতম উপদেষ্টা। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সমালোচনা ধেয়ে এসেছে তার দিকেও।
ইভাঙ্কাকে সমালোচনা করে টুইট করেছেন কৌতুক অভিনেতা প্যাটন অসওয়াল্ট। ‘‘এটাই তো আপনার সন্তানকে আদর করার সেরা সময়। আপনি তো জানেন, ও আপনার হাতের ছায়ায় নিরাপদে রয়েছে’’, লিখেছেন প্যাটন।
এক মায়ের আবার আর্জি, ‘‘আপনি তিন সন্তানের মা। আমিও তাই। কল্পনা করুন তো কেউ আপনার আদরের সন্তানকে কেড়ে নিচ্ছে। আপনি তাদের আর কোনো দিনও দেখতে পাবেন না। আপনার বাবার নেয়া সিদ্ধান্তের ফলে এ রকমই হচ্ছে। কিছু করুন। ’’
অতীতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আটক পরিবারগুলোকে একসঙ্গে থাকতে দেয়া হতো যত দিন না সেই অভিযোগ প্রমাণিত হচ্ছে। কিন্তু এই মাসের শুরু থেকে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে সেই সময়টুকুও দেয়া হচ্ছে না।
নিরাপত্তা দফতরের এক কর্তা জানান, আটক ব্যক্তিদের সরাসরি আদালতে পাঠানো হচ্ছে। তাদের সন্তানদের তুলে দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য ও জনপরিষেবা দফতরের শরণার্থী পুনর্বাসন বিভাগের হাতে।
গত মাসে স্বাস্থ্য ও জন পরিষেবা দফতরের অন্যতম শীর্ষ কর্তা স্টিভেন ওয়াঙ্গার জানান, ২০১৭ সালে শরণার্থী পুনর্বাসন বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয় অন্তত ৪০ হাজার শিশু। উদ্ধারের পর এই শিশুদের সরকারি দায়িত্বে রাখা হয় কয়েক দিন। তার পর তাদের একটা বড় অংশকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল আত্মীয় ও পালক বাবা-মায়ের কাছে। গত বছর সেই রকম সাড়ে সাত হাজার শিশুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল শরণার্থী পুনর্বাসন বিভাগ। স্টিভেন জানান, দেড় হাজার শিশু কোথায়, কী অবস্থায় রয়েছে, তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মতে, তার প্রশাসন এর জন্য দায়ী নয়। ২০০৮ সালের একটি শিশু পাচার বিরোধী আইনের উল্লেখ করে ডেমোক্র্যাটদের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন তিনি। কিন্তু ট্রাম্প যে নীতি ঘোষণা করলেন, তার জন্য কেন ডেমোক্র্যাটরা দায়ী তা অবশ্য স্পষ্ট করেনি তার প্রশাসন।