সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটের মানসম্মত খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী ও জনপ্রিয় প্রতিষ্টানের এক অনন্য নাম ছিল রিফাত এন্ড কোং। সিলেটজুড়ে এ প্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকটি শাখা রয়েছে। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানে রিফাতের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসায় হতবাক সিলেটের ক্রেতারা। ক্রেতা সাধারনের প্রশ্ন এ প্রতিষ্ঠানটিও আমাদের এতদিন ভেজাল খাদ্যপণ্য খাওয়াচ্ছিল!
মানুষ নিজের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রতি খেয়াল রেখে এসব অভিজাত সুপারশপ থেকে খাদ্যপণ্য কিনে থাকে। কিন্তু ‘শর্ষের মধ্যেই যে ভূত’! এসব অভিজাত সুপারশপেও খাদ্যপণ্যে চরম ভেজাল ধরা পড়ছে।
গত ২২ মে সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ সহির প্লাজায় রিফাতের একটি শাখায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে বিভিন্ন ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার জব্দ করা হয়। এছাড়া মিষ্টির মধ্যে মাছি বসে থাকার বিষয়টিও নজরে আসে আদালতের। রিফাতকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত।
এরপর গত ২৪ মে জিন্দাবাজার পয়েন্ট সংলগ্ন রিফাতের আরেকটি শাখায় অভিযান চালিয়ে ভেজাল দই ও সস বিক্রির অপরাধে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এদিকে, মঙ্গলবার (২৯ মে) কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ড এলাকাস্থ রিফাতের মূল কারখানা ও পাশ্ববর্তী আরেকটি কারখানায় অভিযান চালায় র্যাবের একটি দল। পঁচা, বাসি, দুর্গন্ধযুক্ত ও পোকায় ধরা বিভিন্ন ধরনের খাদ্যপণ্য এবং নোংরা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের দায়ে এবার ৮ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় রিফাতকে।
র্যাবের অভিযানের সময় দেখা যায়, কুমারগাঁওয়ে রিফাত এন্ড কোং এর মূল কারখানায় খাবার অনুপযোগী তেল, ফ্রিজে পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত মাংস, খাবার অনুপযোগী পোকায় ধরা ঘি, ডাল, পনির, পঁচা প্রোটিন রয়েছে।
পাশ্ববর্তী তাকওয়া কমপ্লেক্সে রিফাতের আরেকটি কারখানায় খাবার অনুপযোগী ময়দা, আটা, সেমাই তৈরীর সরঞ্জাম দেখতে পায় র্যাবের অভিযানিক দল। উভয় কারখানার পরিবেশ ছিল চরম অস্বাস্থ্যকর, নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন।
এসময় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান রিফাত এন্ড কোং-কে দুটি ধারায় ৮ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
রিফাত এন্ড কোং এ একের পর এক ভেজাল ধরা পড়ায় আঁতকে ওঠছেন সাধারণ মানুষ। তারা বলছেন, মানুষকে এসব কি খাওয়াচ্ছে রিফাত!
নগরীর উপশহরের মনি মিয়া বলেন, ‘রিফাত এন্ড কোং যে মানুষকে এসব অখাদ্য, কুখাদ্য খাওয়াচ্ছে, তা ভাবতেই আঁতকে ওঠছি!’
কুমার পাড়ার সুমন বলেন, ‘যেসব প্রতিষ্ঠান ভেজাল খাওয়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে শুধু জরিমানাই যথেষ্ট নয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে আইনের মুখোমুখি করতে হবে।’