নারী ও পুরুষ যেমন আলাদা মনের অধিকারী, তেমনি আলাদা তাদের চাওয়া। চাওয়ার বৈচিত্র্যে নারী-পুরুষের পরকীয়ায় জড়ানোর কারণও ভিন্ন। পারিবারিক ও পারিপার্শ্বিক নানা কারণে আমাদের দেশের নারীরা ইদানিং পরকীয়ার দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু কেন বাড়ছে এই অনৈতিক সম্পর্কের হার। আসুন জেনে নেয়া যাক নারীকে কেন পরকীয়ায় টানে –
বৈচিত্র্যের খোঁজ
আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীর জীবন খুব একঘেয়ে। প্রতিদিনের রান্নাবান্না, ঘর গোছানো, সন্তানের দেখা শোনা করেই দিন পার হয়। স্বামীকে নিয়ে একটু ঘুরতে যাওয়া কিংবা নিজের জন্য কোনো আলাদা বিনোদনের ব্যবস্থা তার ভাগ্যে জুটে না। ফলে তাদের জীবনটা হয়ে যায় একঘেয়ে ও বৈচিত্র্যহীন। তাই কিছুটা বৈচিত্র্যের খোঁজে নিজের অজান্তেই পরকীয়ায় ঝোঁকে।
মজার সঙ্গ পেতে
আমাদের সমাজের অধিকাংশ নারী নি:সঙ্গতায় ভুগে থাকেন। বিয়ের পর অধিকাংশ নারীই স্বামীর সঙ্গ তেমন একটা পান না। দিনশেষে ব্যস্ত স্বামী ঘরে ফিরে থাকেন খুব ক্লান্ত। দৈনন্দিন কাজের চাপে হারিয়ে যায় রোমান্স। এছাড়াও সন্তানরা একটু বড় হয়ে গেলে তাদের সঙ্গটাও আর পাওয়া হয় না নারীর। এই সময়ে একাকিত্ব দূর করা আর মজার সঙ্গ পেতে চায় মন। তাই কখন যে পরকীয়ার টানতে থাকে তা বোঝার উপায় থাকেনা অনেক নারীর।
বন্ধীদশাকে ভুলতে
অনেকেই হয়তো ভেবে থাকেন যে পরকীয়ার পেছনে মূল কারণ হলো অতিরিক্ত নারী স্বাধীনতা বা স্বভাবের দুর্বলতা। কিন্তু সত্য বলতে, আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীরই স্বাধীনতা নেই। শ্বশুরবাড়ির অতিরিক্ত শাসনে বন্দীদশাকে বরণ করতে হয়। আর তাই সংসারের বদ্ধ কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার আকাঙ্ক্ষায় অনেক নারীই পরকীয়ার প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। তাদের কাছে তখন পরকীয়াটাই মনে হয় স্বাধীনতার সুযোগ।
কাছে আসার সুযোগে
বর্তমান সমাজে অনেক সংসারেই নারী-পুরুষ দুজনেই কাজ করছেন। আর তাই দিন শেষে অল্প কিছুক্ষণ ছাড়া দিনের অধিকাংশ সময়ই দুজন থাকছে পরস্পর থেকে দূরে। এমনকি সারাদিন খোঁজখবর নেয়ারও ফুসরত মিলছে না দুজনের। ফলে বাড়ছে দুরত্ব। এমন ক্ষেত্রে তাই অনেকেই ব্যস্ততার মাঝে একটু আনন্দ খুঁজে নেয়ার আশায় সহকর্মীর দিকে ঝুঁকে পড়ে। শুরু হয় পরকীয়ার সম্পর্ক।
বঞ্চিত হয়ে
অনেক নারীই নিজের সংসারে শারীরিক অথবা মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হন। নীরবে নির্যাতন সহ্য করতে করতে সংসারের প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি হয় অনেক নারীর মনেই। আর তাই সংসারের এই বেড়াজাল থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় অনেক নারীই জড়িয়ে যান পরকীয়ার নিষিদ্ধ সম্পর্কে।
নিজের অমতে বিয়ে করা
খুব কম বয়সে অথবা নিজের অমতে নারীকে বিয়ে দিলে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি অনেক প্রাপ্ত বয়স্ক নারীকেও নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ের পর এমন সমস্যায় পড়তে দেখা যায়। তাদের মনের গভীরে ক্ষোভ লুকিয়ে থাকে। নিজের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে না পারার আফসোস থেকে অথবা ইচ্ছার বিরুদ্ধে করা বিয়ের প্রতি জেদ এর কারণেই অনেক নারী ঝুঁকে পড়ে পরকীয়ার সম্পর্কে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় প্রাক্তন প্রেমিকের সঙ্গে নতুন করে গড়ে ওঠে সম্পর্ক।