ক্রিকেটে ফিক্সিং কেলেঙ্কারি নতুন কিছু নয়। তবে ভারতীয় জুয়াড়ি রবিন মরিসের বিস্ফোরক মন্তব্যে এবার প্রকাশ্যে এল ক্রিকেটের কলঙ্কজনক এক অধ্যায়। যাতে নাম জড়িয়ে গেছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের মতো দলের। অজানা এক কক্ষে এক ব্যক্তি বলে চলেছেন, ‘উইকেট কেমন হবে সেটা আমরা ঠিক করতে পারি। আমরা যেমন চাইব উইকেট তেমন হবে।’ সমস্ত কথা যে রেকর্ড হচ্ছে সেদিকে হুঁশ নেই তার। অবলীলায় সেই ম্যাচ ফিক্সার স্বীকার করে চলেছেন অপকর্মের কথা। আর স্টিং অপারেশন চালাচ্ছেন উল্টোদিকে বসা এক সাংবাদিক।
স্টিং অপারেশনে জনপ্রিয় খেলার অন্ধকার দিক তুলে ধরেছে আল জাজিরা টিভি। আলোচিত জুয়াড়ি রবিন মরিসের বিষ্ফোরক স্বীকারোক্তির পর ক্রিকেট দুনিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। নড়েচড়ে বসেছে আইসিসি। কিন্তু কে এই রবিন মরিস? ভারতের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক?
রবিন মরিস মুম্বাই ক্রিকেটের পরিচিত নাম। স্কুল স্তরে যিনি সারদাশ্রম হাই স্কুলের হয়ে খেলেছেন। কোচ রমাকান্ত আচরেকরের তত্ত্বাবধানে। সেই রমাকান্ত আচরেকর যিনি কিনা আবার ক্রিকেট ঈশ্বর শচীন টেন্ডুলকারের ছোটবেলার কোচ। ৪২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন মরিস। অল-রাউন্ডার হিসেবে রান করেছেন ১৩৫৮ আর উইকেটে পেয়েছেন ৭৬টি।
২০০৪ ইরানি কাপে শেষবার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন মরিস। সেই ম্যাচে অবশিষ্ট ভারতের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট পেয়েছিলেন। তবে ম্যাচের মাঝে কাঁধে গুরুতর চোট পান। চোট এতটাই গুরুতর ছিল যে দ্রুত অস্ত্রোপচার করতে হয়। মরিসের তখন মাত্র ২৭ বছর বয়স। তার পর দীর্ঘদিন ক্রিকেটের বাইরে ছিলেন। অবশিষ্ট ভারতের হয়ে সেই ম্যাচে জাহির খান, গৌতম গম্ভীর, আকাশ চোপড়া, পার্থিব প্যাটেলের মতো ক্রিকেটাররা খেলেছিলেন।
মুম্বাইয়ের হয়ে ২০০৭ সালে মরিসকে শেষবার খেলতে দেখা যায় ওয়েস্ট জোন ইন্টার স্টেট টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে। সেই ম্যাচে অজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে ওপেন করেছিলেন তিনি। ৩ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন রোহিত শর্মা। এর পর ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে খেলেন মরিস। কিন্তু তারপর ক্রিকেট থেকে উধাও হয়ে যান তিনি!
মরিসের ঘনিষ্ঠজনেরা ভারতীয় গণমাধ্যমে বলেছেন, ওই সময় তিনি বেশ ভালো বেতনের চাকরি করতেন। কিন্তু হঠাৎই সেই চাকরি ছেড়ে দেন। মরিসের এক বন্ধু জানিয়েছেন, গত মাসে মুম্বাইতে একটি ক্রিকেট কোচিং সেন্টার শুরু করে বাচ্চাদের প্রশিক্ষণ দিতেন ফিক্সার মরিস। তবে অনেকের মতে, ম্যাচ ফিক্সিং ব্যবসার আড়ালে ওটা ছিল একটা আইওয়াশ মাত্র।