রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ বলেছেন, বাংলা সাহিত্য-সংগীতের অন্যতম পথিকৃত যুগস্রষ্টা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তার কালজয়ী প্রতিভা ও জীবন দর্শন, মানবিক মূল্যবোধের স্ফুরণ, সমৃদ্ধশালী লেখনী বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কবির বাল্য স্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুর নজরুল মঞ্চে জাতীয় পর্যায়ে তিন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, নজরুল শুধু বাংলার জাতীয় কবি নন। তিনি জাগরণের কবি, সাম্যের কবি। তিনি শোষন, বঞ্চনা, অত্যাচার, কুসংস্কার ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে তার লেখনীতে তুলে ধরেছেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, আমাদের জাতীয় সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ সকল গণতান্ত্রিকআন্দোলনে নজরুলের লেখনী আমাদের উজ্জীবীত করেছে। তার জাতীয়তাবোধ বাঙ্গালীর অনন্ত প্রেরণার উৎস। পরাধীন বৃটিশ আমলে সকল ভয়ভীতি উপেক্ষা করে তিনি বাংলা ও বাঙালির জয়গান গেয়েছেন। ‘বাঙালির বাঙলা’ প্রবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘বাঙলা বাঙালির হোক! বাঙলার জয় হোক!বাঙালির জয় হোক। ’
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, কবি নজরুল সমাজ পরিবর্তনের যে অনির্বাণ শিখা জ্বালিয়েছেন তার আলোকচ্ছটা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে ‘সোনার বাংলা’ গড়তে।
আমার বিশ্বাস নতুন প্রজন্ম নজরুল চর্চার মাধ্যমে নিজেদের সমৃদ্ধ করবে এবং বৈষম্যহীন, সমতাভিত্তিক একটি অসম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মানের প্রত্যয়ে দেশপ্রেমের মহান ব্রতে উজ্জীবিত হয়ে জাতি গঠনে অর্থবহ অবদান রাখবে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম সিমিন হোসেন রিমি’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, জেলা প্রশাসক ড. সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস। অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তা ছিলেন বেগম আকতার কামাল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মসিউর রহমান।
পরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রধান অতিথিসহ অতিথিবৃন্দ।
এদিকে নজরুল জন্মবার্ষিকীকে ঘিরে ত্রিশাল সেজেছে ভিন্ন সাজে। দরিরামপুর নজরুল একাডেমি মাঠে বসেছে বই ও গ্রামীণ মেলা। নজরুল মঞ্চে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে বিকেলে থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবকে ঘিরে নজরুল ভক্ত-অনুরাগীদের পদচারণায় মুখর ত্রিশাল।