ঢাকা: গত কয়েক দিনের মতো আজ বুধবার সকালেও সূর্যের দেখা নেই। আকাশে ভারী মেঘ। কালবৈশাখীর ঝাপটার পর ঝমঝমিয়ে নামল বৃষ্টি। এক-দুই ফোঁটা নয়, মুষলধারে বৃষ্টি হয়ে গেল রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সকাল নয়টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ৪৫ মিলিমিটার। ময়মনসিংহে ৬২, নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৫২ ও সিলেটে ২৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
ঘণ্টা দেড়েকের বৃষ্টির পরও আকাশের মুখ গোমড়া হয়েই আছে। বৃষ্টির মাত্রা কিছুটা কমলেও সামনের দিনগুলোয় বন্ধ হওয়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই। বরং কয়েক দিন পর বৃষ্টির প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে। প্রকৃতির এমন আচরণ চলতে থাকলে দাবদাহ আসবে না বলে মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য, বাংলাদেশে প্রতিবছর মে মাসে সাধারণত স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু ২০ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বেশি।
অতিবৃষ্টির কারণ সম্পর্কে আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, পশ্চিম দিক থেকে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত জলীয় বাষ্পের জোগান অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর কম ছিল। এর সঙ্গে ঊর্ধ্ব স্তরেও জলীয় বাষ্পের আধিক্য কম ছিল। কিন্তু মধ্যাঞ্চলের পূর্ব দিকে আবার জলীয় বাষ্পের পরিসর বেশি থাকছে। তাই বায়ুর আর্দ্রতার তারতম্যের রেখার পর মেঘমালা প্রচুর পরিমাণে তৈরি হচ্ছে। এ কারণে দেশের উত্তর থেকে পূর্বাঞ্চলে কালবৈশাখীর সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি বেশি হতে দেখা গেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমা বাতাসের সঙ্গে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা বাতাসে মেঘ সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পাহাড়ে ওই মেঘ বাধা পেয়ে মধ্যাঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝখানে বৃষ্টির কিছুটা বিরতি হলেও তাপমাত্রা খুব একটা বৃদ্ধি পাবে না। ভ্যাপসা গরম কিছুটা অনুভূত হতে পারে, তবে দাবদাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, জুন মাসের ১০ তারিখের দিকে মৌসুমি বায়ু এ দেশের ওপর চলে আসতে পারে। তখন বর্ষাকাল শুরু হয়ে যাবে।
পূর্বাভাস: আজ সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারা দেশের ওপর দিয়ে অস্থায়ী দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া এবং বিদ্যুৎ চমকানোসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বাতাস বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ ও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। আগামী তিন দিন এই ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।