ঢাকা:আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বাবা কামাল উদ্দিন আহমেদের কবরে সমাহিত করা হবে তাজিন আহমেদকে। এর আগে জোহর নামাজের পর গুলশান আজাদ মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে আজ সকাল থেকে তাজিন আহমেদের মরদেহ উত্তরার আনন্দবাড়ি শুটিং হাউসে রাখা হয়। এখানে ছোট পর্দার এই তারকার দীর্ঘদিনের সহকর্মী, বন্ধু আর শুভানুধ্যায়ীরা তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে মারা যান তাজিন আহমেদ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৩ বছর। সেদিন সকাল ১০টার দিকে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন এই অভিনেত্রী। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
তাজিন আহমেদের জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই নোয়াখালী জেলায়। বেড়ে উঠেছেন পাবনা জেলায়। ১৯৯২ সালে ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনা করেন।
তাজিন আহমেদের অভিনয়ের শুরুটা হয় টিভি নাটক দিয়ে। বিটিভিতে তার অভিনীত নাটক ‘আঁধারে ধবল দৃপ্তি’ বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত নাটক ‘নীলচুড়ি’তে অভিনয় করে প্রশংসিত হন তাজিন আহমেদ। ১৯৯৭ সালে থিয়েটার আরামবাগ দিয়ে মঞ্চনাটক শুরু করেন। এরপর নাট্যজন থিয়েটারের হয়ে কিছু নাটকে অভিনয় করেন। পরে আরণ্যক নাট্যদলের ‘ময়ূর সিংহাসন’ নাটকে অভিনয় করেন। এটি তাঁর অভিনীত শেষ মঞ্চনাটক। টিভিতে তার অভিনীত শেষ ধারাবাহিক নাটক ‘বিদেশি পাড়া’।
অভিনয় ও উপস্থাপনার বাইরে লেখালেখি করেন তাজিন আহমেদ। তাঁর লেখা ও পরিচালনায় তৈরি হয় ‘যাতক’ ও ‘যোগফল’ নামে দুটি নাটক। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য নাটক হচ্ছে ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘অনুর একদিন’, ‘এক আকাশের তারা’, ‘হুম’, ‘সম্পর্ক’ ইত্যাদি।
১৯৯১ সালে বিটিভিতে ‘চেতনা’ নামের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপস্থাপনা শুরু করেন। এনটিভিতে প্রচারিত ‘টিফিনের ফাঁকে’ অনুষ্ঠানে টানা ১০ বছর উপস্থাপনা করেন তিনি। একাত্তর টিভিতে ‘একাত্তরের সকাল’ অনুষ্ঠানেও হাজির হয়েছেন।
অভিনয়-উপস্থাপনার পাশাপাশি তাজিন আহমেদ সাংবাদিকতা করেছেন। ১৯৯৪ সালে তিনি দৈনিক ভোরের কাগজের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি প্রথম আলোর শুরুর দিকে প্রদায়ক হিসেবে যুক্ত ছিলেন। তিনি আনন্দ ভুবন পত্রিকায় কলাম লেখক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০২ সালে তিনি জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডে যোগ দেন।