এত কিছুর পরও নীরব কেন সৌদি যুবরাজ?

Slider সারাবিশ্ব

135749_bangladesh_pratidin_salam-prince

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ। বর্তমান সময়ে সৌদির সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি।

বলা হয়ে থাকে ৩২ বছর বয়সী এ তরুণ যুবরাজ অনেকটা মিডিয়া প্রিয়। কিন্তু হঠাৎ করেই আড়ালে চলে গেছেন যুবরাজ। গত ২১ এপ্রিল সৌদি রাজপ্রাসাদের কাছে ড্রোনের উপস্থিতি ও গোলাগুলির ঘটনার পর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। মিডিয়া তো দূরের কথা কোনও সাধারণ অনুষ্ঠানেও তার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
অন্যদিকে ২১ এপ্রিলের ঘটনাকে রুশ ও ইরানি মিডিয়ায় অভ্যুত্থান হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই দিনের ঘটনায় যুবরাজ সালমান নিহত হয়েছেন এমন দাবি করা হয়েছে। যদিও তাদের এ দাবিকে আরব গণমাধ্যম ও কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করে আসছে। বিপরীতে মিশরের সিসির সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। কিন্তু সে ছবি কখন, কোথায় তোলা হয়েছে তা নিয়ে রয়েছে ধুম্রজাল।

ফলে সন্দেহের দাঁনা ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। ক্রাউন প্রিন্স সালমান কী আদৌ জীবিত আছেন না তার মৃত্যু হয়েছে এ নিয়ে পুরো বিশ্ব জুড়েই কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। অার এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারে একমাত্র প্রিন্স সালমানের স্ব-শরীরে মিডিয়ার সম্মুখে উপস্থিতি। কিন্তু তার কোনও উপস্থিতি এখনও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে প্রশ্ন উঠছে এত কিছুর পরও নীরব কেন সৌদি যুবরাজ?
এদিকে সম্প্রতি প্রিন্স সালমানের নির্দেশেই সৌদিতে বেশ কিছু সংস্কার উদ্যোগ লক্ষ্য করা গিয়েছে। যার মধ্যে সিনেমা হল চালু, নারীদের মাঠে বসে খেলা দেখা। এছাড়া দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে প্রিন্সদের গ্রেফতার ও অর্থ আদায়ের পর মুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের সঙ্গে সখ্যতা ইত্যাদি। ধারণা করা হচ্ছে, সালমানের সংস্কার উদ্যোগে অনেকেই নারাজ হয়েছেন। আর এর ফলে বিরোধীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন ক্রাউন প্রিন্স।

উল্লেখ্য, সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ গত বছর জুনে তার ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে যুবরাজ ঘোষণার পর থেকে রক্ষণশীল এ মুসলিম দেশটি বড় ধরনের পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ৩২ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ সৌদি আরবের তেলনির্ভর অর্থনৈতিক কাঠামো সংস্কারের পাশাপাশি সাংস্কৃতিকভাবে তার দেশকে আরও বেশি উন্মুক্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু সরকারের সমালোচনার সুযোগও দিন দিন সঙ্কুচিত হয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

ছেলের অবস্থান সংহত করতে গিয়ে সৌদি আরবে প্রশাসন ও সেনাবাহিনীতে কয়েক দফা বড় ধরনের রদবদল এনেছেন বাদশাহ সালমান। যুবরাজের নেতৃত্বে চালানো ‘দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে’ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, প্রিন্স আর ধনকুবেরকে কারাগারে যেতে হয়েছে। অবশ্য তাদের অধিকাংশকেই পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সৌদি প্রিন্সসহ সরকারি আমলা ও কর্মকর্তাদের ওপর যুবরাজের এমন হস্তক্ষেপের পরিণতি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে যেতে পারে। আর ক্রাউন প্রিন্স সালমানের গত ১ মাস ধরে জনসম্মুখে না আসা প্রশ্ন তুলছে সেদিকেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *