হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: ১৪৩৯ হিজরী মোতাবেক ২০১৮ সালের ১৮মে শুক্রবার মধ্যরাতে সেহরীর মাধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। আর রামাদ্বানের প্রথম দিন থেকেই জমে উঠেছে সিলেট নগরীতে ইফতারীর বাজার। ফুটপাত থেকে অভিজাত রেস্টুরেন্ট- সবখানে ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। আর মজাদার ইফতারের খোঁজে দোকানগুলোতে ভিড় করছেন রোজাদাররা। শনিবার বিকালে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে।
আজ বেলা তিনটা থেকে বিকাল পাচঁটা পর্যন্ত ইফতারির দোকান ঘুরে দেখা যায়, নানা স্বাদের ইফতার সামগ্রীতে দোকানগুলো ভরে গেছে। ক্রেতারাও বিভিন্ন দোকান ঘুরে নিজেদের পছন্দমতো ইফতারি ক্রয় করছেন।
ইফতারির দোকানগুলোতে ছোলা, আলুর চপ, ডিম চপ, বেগুনি, আখনি, ছানা, পেঁয়াজু, খিচুড়ি, হালিম, কাবাব, বাখরখানি, ফিরনি, দই, বিভিন্ন ধরনের ভাজি-বড়া, বিরিয়ানিসহ নানা ধরনের ইফতারী চোখে পড়ার মতো। ক্রেতা আকর্ষণের জন্য দোকানিরা খোলা রাস্তায় স্তরে স্তরে ইফতারি সাজিয়ে রাখছেন।
সিলেট নগরীর উপশহর, দক্ষিন সুরমা, কদমতলি, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, আম্বরখানা, চৌহ্ট্টা, রিকাবীবাজার, শিবগঞ্জ, মদিনা মার্কেট, মেডিকেল রোড এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ইফতারির দোকানগুলোতে ক্রেতাদের আর্কষণ করতে দোকানের বাইরে সাজানো হয়েছে ইফতারির পসরা। আবার কিছু দোকান ইফতারের মেন্যুসম্বলিত লিফলেট পথচারিদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে। এতে এক পাশে সেহরী ও ইফতারের সময়সূচি, অন্যপাশে রেস্টুরেন্টের ইফতার সামগ্রীর তালিকা।
এছাড়াও নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দারবাজার, আম্বরখানা এলাকায় ফুটপাতে আখের গুড়, মুড়ি, লেবু, কলা, চিড়া, আম, খেজু্, নানা রকমের শরবত ও আপেল কিনতে ক্রেতাদের ভিড়ও দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, দুপুর থেকেই ইফতার সামগ্রী বিক্রি শুরু হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবার ভালো বিকিকিনি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন ইফতারী বিক্রেতারা।
এছাড়াও প্রতিবারের ন্যায় এবারও মৌসুমী ইফতার বিক্রেতারা নগরীর ফুটপাত দখল করে ইফতার বিক্রি করতে দেখা গেছে। ফুটপাত ও অলিগলির ওই দোকানগুলোতে পিয়াজু, বেগুনি, ফুলুরী, নারিকেল, কচুরী, আলুচপ, নিমকী, ডিমচপ, সিঙ্গারা, মাটন সমুচা, চিকেন সমুচা, খেজুর, মুড়ি, শাকের বড়াসহ বিভিন্ন ধরনের ইফতারি পাওয়া যাচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষদের ওই দোকানগুলো থেকে ইফতারী ক্রয় করতে দেখা গেছে।
ফুটপাতে ইফতারি বিক্রি করছেন এমন কয়েকজন ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রতি রমজানেই নগরীর ফুটপাতে ইফতারি বিক্রি করে থাকেন। রমজানে ইফতারসামগ্রী ভালোই বিক্রি হয়, তাই তারা অন্য পেশা ছেড়ে ইফতারি বিক্রি শুরু করেন।
ইফতার কিনতে আসা সুমন আহমদ নামের এক যুবক জানান, নগরীর জিন্দাবাজার এলাকায় তিনি একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। রমজানে তাদের অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। তাই তিনি ইফতারি কিনতে রেস্টুরেন্ট এসেছেন। পছন্দের ইফতারি কিনলেও অন্যবারের থেকে এবার ইফতার আইটেমে দাম বেশি বলে জানান তিনি। তবে রমজানে দোকান থেকে ইফতারী কেনার মজাটাই আলাদা। দোকানগুলোতে অনেক সুস্বাদু ইফতারি বিক্রি হয়।