
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক আলহাজ্ব দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মানুষ সীমান্ত শহর (সাবেক মহকুমা) রামগড়ে আসতে শুরু করে। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অভ্যর্থনা কেন্দ্র ও একটি শক্তিশালী প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। দিনে দিনে রামগড় হয়ে উঠে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার কৌশলগত স্থান। রামগড়কে হুমকি ভেবে ২মে প্রথম রামগড়ে হামলা চালায় পাকবাহিনী। সম্ভাব্য ক্ষতির আশঙ্কায় আগেই তৎকালীন রামগড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেজর রফিকুল ইসলামের নির্দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের সব যুদ্ধসামগ্রী সীমান্তের ওপারে ভারতের সাবরুমে স্থানান্তর করা হয়। ওইদিনই পাক হানাদার বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে রামগড় শহর ও আশপাশের এলাকা জ্বালিয়ে দেয়। এতে পাক বাহিনীর হাতে রামগড়ের সাময়িক পতন হয়।
৬ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা তিনটি ভারতীয় জঙ্গী বিমানের সহায়তায় রামগড়স্থ হানাদার বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনার উপর গোলাবর্ষণ করে। ওই হামলায় হানাদার বাহিনীর অনেকেই নিহত হয় এবং বাকিরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে রামগড় ত্যাগ করে। ৮ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতায় দুইটি ভারতীয় জঙ্গি বিমান সমগ্র রামগড় পরিক্রমা করে নির্বিঘ্নে ঘাটিতে পৌঁছে রামগড় হানাদারমুক্ত বলে জানায়। এরপর রামগড়ের মুক্তিকামী মানুষ উৎসবে মেতে উঠে। ৮ ডিসেম্বর রামগড়ে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক প্রয়াত সুলতান আহম্মদ মুক্তিকামীদের নিয়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন এবং রামগড় হানাদারমুক্ত ঘোষণা করেন। এ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনৈতিক সংগঠনগুলো শোভাযাত্রা, আলোচনাসভাসহ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।