বাংলাদেশ ও ভারতে চলমান মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। চাহিদার তুলনায় আসন কম হওয়ায় টিকিট সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ ছাড়া যাত্রাপথে কাস্টমস বিভাগের মাধ্যমে হয়রানি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সাধারণ যাত্রীরা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে ভারত যাওয়ার পর কলকাতা স্টেশনে যাত্রীদের কাছে ব্যাগেজ তল্লাশির নামে দুর্ভোগে ফেলা হয়। বাড়তি টাকা না দিলে চেক করার নামে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে রাখা হয়। একইভাবে কলকাতা থেকে ঢাকায় ফেরার পর ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে আরও বেশি তল্লাশি করা হয়। অতিরিক্ত বা অবৈধ পণ্য আনার অজুহাত তুলে গোটা লাগেজ তছনছ করে হয়রানি চলে। টাকা দেওয়া ছাড়া এ বিড়ম্বনা
থেকে পার পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
যদিও দুর্ভোগ ঠেকাতে ওয়ানস্টপ সার্ভিস মানে ‘অ্যান্ড টু অ্যান্ড ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস’ সার্ভিস চালু হয়। গত বছরের ১০ নভেম্বর এ সার্ভিস চালুর উদ্দেশ্য ছিলÑ যাত্রাপথে বাংলাদেশের দর্শনা এবং ভারতের গেদে স্টেশনে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের নামে ৩ ঘণ্টা সাশ্রয় করা। এতে সময় বাঁচলেও ক্যান্টনমেন্ট ও কলকাতা স্টেশনের হয়রানি রয়ে গেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঢাকা-কলকাতা রুটের মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের আরেকটি বড় সমস্যা টিকিট। অন্তত ১০-১৫ দিন আগে টিকিট সংগ্রহ করতে হয়। অনেক সময় এক মাস আগে কমলাপুর কাউন্টারে গিয়ে টিকিট পাচ্ছেন না যাত্রীরা। আবার স্টেশনে মাত্র একটি মৈত্রী কাউন্টার থাকা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে অনেক যাত্রীর।
বর্তমানে মৈত্রী ট্রেনে ১৪৪টি এসি সিট এবং ৩১২টি রয়েছে এসি চেয়ার। চাহিদার তুলনায় টিকিট কম হওয়ায় সংকট কাটছে না। তা ছাড়া জরুরি যাত্রীদের জন্য নেই বিশেষ ব্যবস্থা। বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত কোচ নেই। আগস্টে নতুন কোচ এলে সংযোজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। ৭৮ সিটের একটি এসি কোচ সংযোজন করতে ইতোমধ্যে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, দুদেশের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কোচ সংযোজন করতে হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের বহরে নতুন কোচ আসছে। তখন অন্তত দুটি কোচ সংযোজন করা হবে। যেহেতু উভয় দেশের বিষয়, তাই এরই মধ্যে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ঢাকা-কলকাতা রুটের মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে প্রতি সপ্তাহে শুক্র, শনি, রবি ও বুধবার এবং কলকাতা থেকে শুক্র, শনি, সোম ও মঙ্গলবার চলাচল করে। টিকিট এসি সিটের জন্য ৩ হাজার ৪০০ টাকা এবং এসি চেয়ারের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা। আর খুলনা থেকে কলকাতা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস চলে সপ্তাহে একদিন; বৃহস্পতিবার। বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের দাম এসি সিটের জন্য ২ হাজার টাকা এবং এসি চেয়ারের জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকা।