কোটা কোনো চিরন্তন ব্যবস্থা নয়: আকবর আলি খান

Slider বাংলার মুখোমুখি

117069_lead

ঢাকা: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, কোটা কোনো চিরন্তন ব্যবস্থা নয়। কোটা ব্যবস্থা হলো নির্দিষ্ট সময়ে একটি লক্ষ্য অর্জনের জন্য। লক্ষ্য পূরণ হলে আর কোটার প্রয়োজনীয়তা থাকে না। তিনি বলেন, পিছিয়ে থাকা ৫ থেকে ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নের মূলস্রোতে নিয়ে আনতে সরকারকে প্রতিবন্ধীদের জন্য নীতিমালা করতে হবে। শনিবার বিএফডিসিতে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত দেশে প্রথমবারের মতো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আকবর আলী খান এসব কথা বলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সংসদীয় পদ্ধতির এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল- ‘প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা সংরক্ষণ টেকসই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।’ ব্যতিক্রমধর্মী এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন বিরোধী পক্ষ চবি পাহাড়িকা দল।

ছায়া সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলের বিতার্কিকদের বিতর্ক পর্ব শেষে আকবর আলী খান বলেন, আমাদের দেশে প্রায় এক কোটি প্রতিবন্ধী রয়েছে। তাদেরকে বিধাতার অভিশাপ মনে করা হয়। তারা যদি লেখাপড়া করে চাকরি না পায় তাহলে তাদেরকে রাষ্ট্রের মূলস্রোতে প্রবেশ করা অসম্ভব। পাশাপাশি দেশের জাতীয় আয়ও কমে যাবে। তাদেরকে লেখাপড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাকরিও দিতে হবে। এজন্য প্রতিবন্ধীদের নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করে সরকারকে নীতিমালা প্রণয়ণের পরামর্শ দেন তিনি। প্রতিবন্ধীদের কোটা বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টা বলেন, সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকলেও প্রতিবন্ধীদের জন্য তেমন কোনো কোটা নেই। তাদের জন্য মাত্র ১ শতাংশ সাব কোটা রয়েছে। তাও আবার অস্পষ্ট। তাই প্রতিবন্ধীদের বিশাল এই জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে নানা ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে রাষ্ট্রকে। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে প্রতিবন্ধীদের এ সুযোগ সুবিধাকে এফারমেটিভ একশন বা ইতিবাচক ব্যবস্থা বলে মনে করা হয় বলে উল্লেখ করেন আকবর আলী খান। তবে কারো জন্য কোটা ব্যবস্থা চিরস্থায়ী নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা অপ্রতুল। দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। তাদেরকে এসব ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা দিয়ে সরকারি-বেসরকারি খাতে পারদর্শী করে তুললে প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা আর চিরন্তন ব্যবস্থা হয়ে থাকবে না। রাষ্ট্রের উন্নয়নে সবার সমান অংশগ্রহণ থাকলে সোনার বাংলা নির্মাণ করা সম্ভব বলে জানান ড. আকবর আলী খান। যুক্তির আলোয় দেখি শ্লোগানে অনুষ্ঠিত প্রতিবন্ধীদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সরকারি দলের বিতার্কিক হিসেবে ছিলেন, মো. শাকিল হোসেন, জিন্নাতুন নিসার জয়ী ও মো. মিজানুর রহমান। আর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধী পক্ষে ছিলেন, তানজিলুর রহমান, মো. রাগিব আরাফাত ও মো. রাকিবুল ইসলাম। মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগি অধ্যাপক মু. শাহ আলম চৌধুরী, লেখক ও প্রতিবেদক আবু মোহাম্মদ রইস, একাত্তর টেলিভিশনের কূটনৈতিক প্রতিবেদক ঝুমুর বারী, লেখক ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক জাহিদ রহমান ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগি অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *