প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগন। জনগন ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নিয়োগ করবেন জনগন ও রাষ্ট্রের সেবা করার জন্য। এটাই গণতন্ত্র। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে গনতন্ত্র এখন উল্টো পথে ধাবিত। জনপ্রতিনিধি প্রার্থীরা এখন ভোটের উৎসবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর উপর নির্ভর করছেন। যারা ভোট দিবেন তাদের উপর নয়, যারা ভোট গ্রহন নিরাপদ করবেন, তাদের উপর পাশ-ফেল নির্ভর করছে! কেন? এই ধরণের নিম্নমূখি গণতন্ত্র, দেশের জন্য বিপদজনক।
সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় সরকারের দুটি বড় নির্বাচন স্থগিত হয়েছিল। একটি চালু হয়েছে আরেকটি বন্ধ আছে। নির্বাচন কমিশনের আপিলের কারণে একটি চালু হল। আরেকটিতে নির্বাচন কমিশন অনেকটা নীরব থাকায় কোন সুফল আসছে না। ফলে বাঁধা পড়া নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে এখনো শংকা কাজ করছে। সঠিক সময়ে ভোট হয় কি না। আর একটি বড় নির্বাচন চলছে। আর মাত্র ২ দিন বাকী।
১৫ মে খুলনা সিটি নির্বাচন। এই নির্বাচনে প্রধান দুই প্রার্থী পারস্পরিক যে সকল অভিযোগ করছেন সবই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের ঘিরে। সরকার বিরোধী প্রার্থী বলছেন, পুলিশ গণগ্রেফতার করছে। আর সরকারী দলের প্রার্থী বলছেন, অস্ত্র ঢুকে গেছে, গ্রেফতার করা জরুরী। এ ছাড়া খুলনা সিটি নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে সরকারী দল আওয়ামীলীগ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন একই পদে আরো একজন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছেন তবে দায়িত্ব হল তদারকি করা। একজন কাজ করবেন আরেকজন তদারকি করবেন। কিন্তু বিরোধী প্রার্থীর অভিযোগ ছিল, পুলিশ কমিশনারকে প্রত্যাহার করে গণগ্রেফতার বন্ধ করা। কিন্তু নির্বাচন কমিশন এই ব্যাপারে এখনো কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
খুলনা সিটি নির্বাচনে দুই প্রার্থীর অভিযোগ খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে, দুটি অভিযোগই সরকারী কর্মচারী নির্ভর। যারা ভোট দিবেন তাদের নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নেই। এতেই মনে হয়, গণতন্ত্রের ভোট উৎসব হয়ে যাচ্ছে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নির্ভর। কর্মচারী নির্ভর ভোট উৎসব হওয়ায় প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগন এখন দিশেহারা। কারণ যারা ভোট দিবেন তারাই পাশ ফেল নির্ধারণ করবেন। কিন্তু যারা ভোট নিবেন তারা যদি পাশ ফেল নির্ধারণ করেন, তবে গণতন্ত্রের অন্যতম উৎসব “ভোট উৎসব” তার প্রাণ হারাবে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে গণতন্ত্র। মালিক বাদ দিয়ে কর্মচারী নির্ভর ভোট উৎসব হলে গণতন্ত্র নিম্নগামী হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।
তাই সকলের উচিত প্রকৃত গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকরুপ দিতে হলে ভোটের ফলাফলের জন্য জনগনের উপর নির্ভর করতে হবে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের উপর নয়।
ড. এ কে এম রিপন আনসারী
এডিটর ইন চীফ
গ্রামবাংলানিউজটোয়ন্টিফোরডটকম