স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর অফিস: আপিল বিভাগের রায়ে প্রমানিত হল স্থগিত আদেশ সঠিক ছিল না। তাহলে গাসিক নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়ে না হওয়ার ফলে যে ক্ষতি হল তার দায় কার? কে নিবে এই দায়ভার? ক্ষতিপূরণই বা কে দিবে? আর এই অবস্থায় ২৮ জুনের মধ্যে যে কোন দিন নির্বাচন হলে আগের আনন্দ ফিরে আসবে? না, নতুন আনন্দ করতে হবে গাজীপুরবাসীকে, সেটা নিয়ে নানা প্রশ্ন।
সাম্প্রতিক সময়ের ইতিহাস বলছে. বার বার খারিজ হওয়া একটি রিট আকস্মিকভাবে ভয়াল মূর্তিরুপ ধারণ করে ৮ দিন আগে গাসিক নির্বাচন স্থগিত করে দিল। ভেঙে দিল লাখো জনতার মন। আবার স্থগিতাদেশ বাতিল হয়েও গেলো। তাহলে সহজেই বুঝা যায়, রিট একটি ষড়যন্ত্র ছিল নির্বাচনকে পন্ড করার জন্য। এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কারা যুক্ত ছিল তা পরিস্কার নয়। তবে কিছু কাজ ও আচরণ অনেকের মনেই সন্দেহ সৃষ্টি করছে।
আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রাপ্ত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের কৌশলে অভিযোগ বা তার সমর্থকদের বিভিন্ন মন্তব্য ও বাস্তবতা থেকে জানা যায়, রিটের বাদী আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বঞ্চিত এডভোকেট আজমত উল্লাহ খানের বিয়াাই। বিষয়টি অভিযোগ আকারে স্পষ্ট হলেও আজমত উল্লাহ খান এ বিষয়ে কিছুই বলেন নি। আদালতের স্থগিতাদেশ হাতে পাওয়া আগেই নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী কার্যক্রম তাৎক্ষনিকভাবে বন্ধ করে দেয়াটাও সন্দেহের মধ্যে পড়ে। কারণ কমিশন স্থগিতাদেশ অফিসিয়ালী হাতে পেয়ে প্রয়োজনীয় প্রতিকার চাইতে পারতেন। প্রতিকার না পেলে ১৫ তারিখও নির্বাচনী কার্য়ক্রম বন্ধ করা যেত। আর আদালতে আপিল করার ঘোষনা দেয়ার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার গাজীপুর এসে বলে গেলেন আদালত বললেও ১৫ মে নির্বাচন করা সম্ভব নাও হতে পারে। এরই বা কি কারণ? আদালত আদেশ দেয়ার পর নির্বাচন কমিশন এই কথাটা বলতে পারতেন বা আদালতে গিয়ে কথাটা জানাতে পারতেন। এই ক্ষেত্রেও নির্বাচন কমিশন সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।
আর দুই প্রার্থী আপিল করার পর নির্বাচন কমিশন আপিল করার সিদ্ধান্ত নিল। এটা কেমন কথা। স্থগিত হওয়ার সময় আদালতে নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী ছিলেন এবং তিনি শুনানীর আগে রিটের কপি পেয়েছেন। নির্বাচন স্থগিত শুনানীতে ওই আইনজীবী নির্বাচন স্থগিত না করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন কেন করেন নি! তা নিয়েও প্রশ্ন চারিদিকে।
এ দিকে নির্বাচন স্থগিত ঘোষনার পর একটি অক্ষত গাড়িকে ক্ষত দেখিয়ে করা মামলায় বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অস্যখ্য সদস্যের বিরুদ্ধেই শুধু নয়, এক নেতার স্ত্রীকেও আসামী করা হয়েছে। ওই ঘটনায় আটক হয়ে ছাড়া পেয়েছেন বিএনপির হেভিওয়েট নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান।
গাজীপুর পুলিশ বলছে, নাশকতার ষড়যন্ত্রের জন্য ওই মামলা হয়েছে। এই মামলায় পড়ে ধানের শীষ এখন নেতা শূন্য। নেতারা আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন।
সাধারণ মানুষ বলছেন, গাসিক নির্বাচন নিয়ে নিশ্চিত কোন ষড়যন্ত্র হয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই। স্থগিত নির্বাচন আবার চালু হওয়ার পর এখন সহজেই প্রশ্ন এসে যায়, ১৫ মের নির্বাচনের মত আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হবে কি না? বিনা কারণে মিথ্য অজুহাতে কেন নির্বাচনটি বন্ধ করা হল, তা নিয়ে নানা মহলে নানা প্রশ্ন। আর সকলের কাছে একটি প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই ঘুরে ফিরে আসছে, মিথ্য অজুহাতে নির্বচান অফ আর অন হওয়ার দায় কে নিবে? আর ক্ষতিপূরনই বা কে দিবে?