টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে দুই যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলায় দুই দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহষ্পতিবার বিকেলে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর থানা আমলী আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মাসুম এই রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
এর আগে বুধবার এমপি রানাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। একই দিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল ডিবি’র ওসি আদালতে তার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
টাঙ্গাইল ডিবি’র ওসি অশোক কুমার সিংহ বলেন, এমপি আমানুর রহমান খান রানা আগে থেকেই টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক আছেন। টাঙ্গাইলের দুই যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলায় এমপি রানাকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য গত ৩ মে আদালতে আবেদন করেছিলাম।
বুধবার আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে এমপি রানাকে এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওইদিনই আমরা তার বিরুদ্ধে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করি। বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর থানা আমলী আদালতে এমপি রানার উপস্থিতিতে এই রিমান্ড বিষয়ে শুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় আসামীপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ডের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানী শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুম দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এখন আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেলেই এমপি মহোদয়কে কাশিমপুর কারাগার থেকে রিমান্ডের জন্য টাঙ্গাইলে নিয়ে আসব।
আসামীপক্ষের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল বাকী মিয়া বলেন, এমপি রানার বিরুদ্ধে রিমান্ড মঞ্জুর করায় আমরা সংক্ষুব্ধ। এই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। সে পর্যন্ত এই রিমান্ড স্থগিত চেয়ে আদালতে একটি দরখাস্ত দিয়েছি।
অশোক কুমার সিংহ বলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা শামীম ও মামুন ২০১২ সালের ১৬ জুলাই তাদের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলযোগে টাঙ্গাইল শহরে এসে নিখোঁজ হন।
ঘটনার পরদিন শামীমের মা আছিয়া খাতুন এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এক বছর পর ২০১৩ সালের ৯ জুলাই নিখোঁজ মামুনের বাবা টাঙ্গাইল আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে তদন্ত করে পুলিশ ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি তালিকাভুক্ত করে। এই মামলায় গ্রেফতার হওয়া শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার খন্দকার জাহিদ গত বছর ১১ মার্চ, শাহাদত হোসেন ১৬ মার্চ এবং হিরন মিয়া ২৭ এপ্রিল এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে তারা উল্লেখ করেন, এমপি রানার নির্দেশে যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুনকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল।
বৃহষ্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এমপি আমানুর রহমান খান রানাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে টাঙ্গাইল আদালতে আনা হয়। রিমান্ড বিষয়ে শুনানী শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।