নাহিদ সুলতানা রানু
সামজিক যোগাযোগ সঙ্গী
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
ঢাকা: আমি নারী। আমি চিরকালই সংগ্রামী। বেগম রোকেয়া বা রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের হাত ধরে নারী চলে আসেন বাইরে। পুরুষের পাশাপাশি নারীর পথচলা আরো সমৃদ্ধ করেন বেগম সূফিয়া কামাল। সেই থেকে রেঁনেসার জাগরণে নারী এখন পথচারিনী। বাস্তবতার সঙ্গে সংগ্রাম করে নারীকে যেতে হবে বহু দূর। অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছতে নারীর অগ্রযাত্রা সমাজ ব্যবস্থাকে পাল্টে দিতে পারে অনাকাংখিতভাবে। নারী-পুরুষের ওই সেতু বন্ধন সৃষ্টি করতে পারে সমাজ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে এক নতুন যুগের সূচনা।
নারী আমি নারী। নারীত্ব আমার অহংকার। পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করতে হচ্ছে বিভিন্ন চরিত্রে। কখনো কন্যা, কখনো জায়া আবার কখনো জননী। আমি আমার আমিত্বের মাঝে লালন করি নারীত্বকে। আমার সত্ত্বায় চির জাগ্রত আমার অহংকার আমি নারী।
আমি নারী একদিনেই নারী হয়ে উঠিনি। বাবা-মার আদরে, শাসনে ছোট্ট কন্যা শিশুটি কখন যে কৈশরে অবর্তীণ হয়েছিলাম টেরই পাইনি। কৈশরের জাদুময়তা কাটাতে না কাটাতেই টের পেলাম বাস্তব পৃথিবীর চোখ রাঙ্গানি, অনুভব করতে শিখলাম বাস্তবতা জীবনবোধ। অবগাহন করলাম সমসাময়িক চলমান জীবনের অলিতে গলিতে। ঠিকানা খুঁজে পেলাম শেষ গলিটার দু’তলা বাড়িটার চিলেকোঠায়।
নতুন পৃথিবীটাকে আত্মস্থ করতে চেষ্টা করলাম দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ, সচেতনতা আমাকে পথ দেখালো সামনে এগিয়ে যাওয়ার। কখনো কর্দমাক্ত কখনো পিচ্ছিল কখনো সহজ সব পাওয়ার আনন্দে উদ্বেলিত আমি নতুন করে অনুভব করলাম মাতৃত্বের স্বাদ।
পরিবার নামক সামাজিক দায়বদ্ধতায় নিজেকে আবিস্কার করলাম নতুনরূপে। শশুড়-শাশুড়ী, স্বামী-সন্তান ত্রিমূখী ক্রিজে আমাকে ব্যাট চালাতে কখনো খেলতে হয়েছে ডিসেন্সিভ (রক্ষণাত্মক), কখনো ডাউন দা উইকেটে শর্ট পিছ বল মাঠের বাইরে (আক্রমানাত্মক) আবার কখনো টেস্ট ম্যাচ (ধৈর্যের পরীক্ষা)।
একই অংগে বহুরূপ ধারণ করে আমি নারী বিজয়ের মশাল হাতে নিয়ে ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিয়ে এগিয়ে চলছি গন্তব্যে। জীবনযুদ্ধে পরাজয়ের গ্লানি আমাকে ছুঁতে পারেনি-ব্যার্থহীন কণ্ঠে একথা বলবনা, তবে জোড় গলায় বলতে পারি বারবার উঠে দাঁড়িয়েছি, আমার পথ চলা শুরু করেছি, বাঁচতে শিখেছি, হাপিয়ে পড়িনি- কারণ আমাকে যে যেতে হবে দূর-বহুদূর…।