স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: নির্বাচনের মাত্র ৮দিন বাকী থাকার পূর্বে গাজীপুর সিটি নির্বাচন স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
আজ রোববার এক আদেশে আদালত এই রায় দেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত করেছে হাইকোর্ট। আজ রোববার এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ছয়টি মৌজা অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৩ সালে ১৬ জানুয়ারি গেজেট প্রকাশ করেছিল ইসি।
সেই গেজেট চ্যালেঞ্জ করে রোববার এক নম্বর শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবিএম আজহারুল ইসলাম সুরুজ একটি রিট আবেদন করেন।
তার আবেদনের ওপর শুনানি নিয়েই হাই কোর্ট বেঞ্চ ভোট তিন মাসের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থগিতাদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।
আগামী ১৫ই মে এ সিটিতে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো।
এর আগে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে (গাসিক) সাভারের শিমুলিয়া ইউনিয়নের ছয়টি মৌজা নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করে দেয় আদালত। আদেশ খারিজের পর বাদী বলেছিলেন, তিনি আপিল করবেন।
রিটে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার, এলজিআরডির উপ-সচিব (সিটি কর্পোরেশন-২ সেকশন), ঢাকার ডিসি, গাজীপুরের ডিসি, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বিবাদী করা হয়েছে।
১০ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এম.ফারুকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন এবং পরে খারিজ হয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট এ কে এম এনায়েত উল্লাহ চৌধুরী ও শহীদুল ইসলাম।
এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন সাভারের আশুলিয়া থানার শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ বি এম আজহারুল ইসলাম সুরুজ।
রিট আবেদনে সাভারের ছয়টি মৌজাকে অন্তর্ভুক্ত করা কেন অবৈধ ঘোষণ করা হবে না এ মর্মে রুল জারি করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এ রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সীমানা নিয়ে গেজেট ছয় মৌজার ক্ষেত্রে স্থগিত রাখার আবেদন জানানো হয়েছে।
এদিকে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য আগামী ১৫ মে দিন নির্ধারণ ছিল। ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন গঠিত। এখানে ভোটার ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৫ জন। গত ৪ মার্চ সিটি কর্পোরেশনটির সীমানা নিয়ে গেজেট জারি করে। যেখানে শিমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়বাড়ী, ডোমনা, শিবরামপুর, পশ্চিম পানিশাইল, দক্ষিণ পানিশাইল ও ডোমনাগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আইনজীবী এ কে এম এনায়েত উল্লা চৌধুরী বলেন, ২০১৩ সালে এ ছয়টি মৌজাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তখন বিষয়টি নিয়ে এ বি এম আজহারুল ইসলাম সুরুজ আবেদন করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সে আবেদনটি গ্রাহ্য না করায় তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। তখন আদালত আজহারুল ইসলামের আবেদনটি পুনর্বিবেচনা করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু এরই মধ্যে ২০১৬ সালে শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে এ ছয়টি মৌজা শিমুলিয়ার মধ্যেই ছিল। সেই নির্বাচনে আজহারুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এখন আবার এ ছয় মৌজাকে গাজীপুর সিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যেহেতু তিনি ছয়টি মৌজার ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাই এ ছয়টি মৌজাকে সিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন,আজ সকালে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কিছু কাগজপত্র উপস্থাপন করার কথা ছিল। কিন্তু তারা সময় চাওয়ার পর আদালত দুপুর দুইটার পর ফের শুনানির জন্য সময় নির্ধারণ করেন। রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে কিছু কাগজপত্র উপস্থাপন করে শুনানী করায় আদালত রিটটি খারিজ করেছিলেন।
আজ আবার ওই রিটের প্রেক্ষিতে আদালত গাসিক নির্বচান ৬ মাসরে জন্য স্থগিত করে রুল জারী করল।