ঢাকা: দিন যত যাচ্ছে, এবারের বৈশাখ মাসে ঝড়-বৃষ্টির দাপট যেন ততই বেড়ে চলছে। প্রায় প্রতিদিনই আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে কালবৈশাখী ঝড় দেশের কোথাও না কোথাও বয়ে যাচ্ছে। শুধু ঝড় নয়, প্রচুর বৃষ্টিও হচ্ছে। সামনের কয়েক দিন বৃষ্টির মাত্রা আরও বাড়বে।
আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে ভারী বৃষ্টির সতর্ক বাণী দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বজ্র মেঘের ঘনঘটা বাড়ার কারণে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পরবর্তী ১৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রামর বিভাগের কোথাও কোথাও দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এই বৃষ্টির পরিমাণ হবে ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার।
ভারী বৃষ্টি ছাড়াও রাজশাহী, রংপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এ জন্য এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, সারা দেশে আগামী ৬ মে পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি গুরুত্বহীন হয়ে গেছে। এ কারণে বৃষ্টি হতে পারে। তবে কালবৈশাখীর জন্য বৃষ্টি বেশি হবে।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরও ৬ মে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, উত্তর প্রদেশের বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারের বৈশাখ মাসে অন্যান্য বছরের চেয়ে তুলনামূলক বেশি ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম এম আমানত উল্লাহ খান প্রথম আলোকে বলেন, পশ্চিম দিক থেকে যে বাতাস আসছে, এর মধ্যে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি রয়েছে। এ কারণে কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে।
এদিকে গতকাল বুধবার সকাল ছয়টা থেকে আজ সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকায় ৫, ফরিদপুরে ২১, টাঙ্গাইলে ১৭, গোপালগঞ্জে ২২, ময়মনসিংহে ৩, চাঁদপুরে ৩৩, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ২০, রাজশাহীতে ২৩, রংপুরে ৪, যশোরে ৩৫ এবং বরিশালে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।