ঢাকা: বেলা সাড়ে ১১টা। কালো মেঘে ঢেকে গেছে ঢাকার আকাশ। চারদিক অন্ধকার। এর মধ্যেও পুব আকাশের এক কোণে কিছুটা আলোর দেখা মেলে। অবশ্য সেই আলো রাজধানীকে আলোকিত করতে পারেনি। সড়কে মোটরযানগুলো চলছে আলো জ্বেলে।
১০ মিনিটেই আঁধারে ঢেকে যায় সারা ঢাকা। পুব আকাশে যেটুকু আলোর দেখা মিলেছিল, সেটুকুও মিলিয়ে যায়। দুপুর পৌনে ১২টায় ভরদুপুরে নেমে আসে রাতের আঁধার।
মধ্যবৈশাখের দুপুরে এমন আবহাওয়ায় শুরুতে দুরুদুরু মনে ছিলেন নগরবাসী। কী জানি কী হয়! কালবৈশাখী নগরে বড় ধরনের থাবা বসায় কি না! শিগগিরই সে ভয় কেটে যায়। কালো মেঘ কেটে গিয়ে ধুলোট মেঘের দেখা মেলে। হালকা বৃষ্টি আর শনশন বাতাসে শান্তির পরশ পান ঢাকার মানুষ।
এরপরই শুরু হয় বৃষ্টি। অমনি রাস্তাগুলোয় হুড়োহুড়ি, নিরাপদ আশ্রয়ে খোঁজে ছুটোছুটি। অনেকে ছাতা ফুটিয়ে বৃষ্টি আড়াল করেন। তবে মোটরসাইকেল আরোহীদের অনেকেই কষ্টটা ছিল ভিন্ন রকমের। যাঁদের রেইনকোট ছিল, তাঁরা নিজেদের রক্ষা করতে পেরেছেন। কিন্তু যাঁদের ছিল না, তাঁরা সিগন্যালে দাঁড়িয়ে ভিজেছেন অসহায়ের মতো।
বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে অন্ধকার কিছুটা কেটে যায়। কিন্তু তখনো বৃষ্টি, বাতাস আর মেঘের গর্জন চলছিল সমান তালে।
প্রকৃতির এই মেজাজ আগামী দুই দিন থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ সোমবার সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, প্রবল বজ্রমেঘের ঘনঘটার কারণে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সারা দেশে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এ ছাড়া রংপুর, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াসহ কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে। এ জন্য এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। দেশের অন্যান্য এলাকার ওপর দিয়ে ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই এসব এলাকায় ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
খারাপ আবহাওয়ার কারণে এ সময় বেশ কয়েকটি ফ্লাইটের সময় পরিবর্তন করে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ফলে বিমানবন্দরে অনেক যাত্রীকে অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে।