মাসুদ পারভেজ চৌধুরী, কাপাসিয়া(গাজীপুর) প্রতিনিধি: কাপাসিয়ায় বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের ধূম পড়েছে। গত মৌসুমে বোরো ধানের দাম মন প্রতি সাড়ে বারো’শ টাকা হলেও এবার বাজারে মন প্রতি ছয়’শ টাকা করে নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে জানান স্থানীয়রা। ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করতে চান কৃষকরা।
আজ শনিবার দুপুরে উপজেলার , তরগাঁও,বাঘিয়া,মৈশন, রায়েদ,আড়াল, দক্ষিণ গাঁও, মাদুলীবিল, পাথার দারা, বগাইট বিল, ধামচিরাসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে এসব ধান কাটার চিত্র চোখে পড়েছে। ভারী বর্ষণ, কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টি থেকে রেহাই পেতে পাকা ও আধা পাকা ধান কেটে মাড়াই দিতেও দেখা যায়।
সরেজিমনে গিয়ে দেখা যায়, কাপাসিয়া উপজেলার এগারো ইউনিয়নে এখনো পর্যন্ত কোনো ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে না উঠায় এবং লাভজনক ফসলের অভাবে কৃষকের প্রধান অবলম্বন ধান। নদী বেষ্টিত কাপাসিয়ায় কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ধান চাষ করেছে। যত দূর চোখ যায় শুধু ধান আর ধান।
একাধিক কৃষক জানান, নিজের মজুরী ছাড়া বিশ গন্ডা জমিতে চাষ ১২০০, বীজ ১০০০, সার ও জৈব ২৫০০, বাছাই ২০০০,
সেচ ৩৫০০, কীটনাশক ২৫০০, ধান কাটা ও মাড়াই ৪০০০ মোট ১৫,৫০০টাকা খরচ হয়। এছাড়া রয়েছে ব্রাস্ট্রের আক্রমণ। এক কানি (বিশ গন্ডা) জমিতে আনুমানিক বিশ মন ধান উৎপাদন হয়। তাতে ধানের খরচ মন প্রতি ৭৭৫ টাকা হয়। বাজারে ভেজা ধান চার’শ টাকা, শুকনো ধান ছয়’শ টাকা হলে মন প্রতি তিন’শ পঁচাত্তর থেকে এক’শ পঁচাত্তর টাকা লোকসান হচ্ছে।
জমিতে ধান কাটা অবস্থায় উপজেলার মৈশন গ্রামের কৃষক জমিরউদ্দিন বলেন, বাজারে গত মৌসুমে সাড়ে বারোশ টাকায় ধান বিক্রি করেছি। এবার শুনতাছি মাত্র ছয়’শ টাকা। আমাদের কিছু করার নাই। ধানের দাম কম থাকলেও জমি পতিত রাখা যাবেনা। দস্যুনারায়ণপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, গেরস্থি ভালো লাগেনা। ধানের দাম বেশি হলে ধান করব। জমি এখন বর্গা দিয়া দিছি,বাঘিয়া গ্রামের হিরন মেলেটারি গ্রাম বাংলা নিউজ কে জানান এই বার মোটামুটি ভাল ফলন হয়েছে, আর খড় ও ভাল ধানের দাম কম হলেও ওনার খড়ের বেশী প্রয়োজন কারন ওনার দেশী বিদেশি জাতের ১০/১২ টা গরু আছে গরুর খাবারের জন্য অনেক টাকার খড় কিনতে হয়। শ্রম দিয়েছেন তরুণ গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম কাইয়ূম বলেন, ধানের দাম বেশি হলে ভালো হতো।
কাপাসিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশীষ কুমার কর জানান, গত অর্থ বছরে বোরো চাষে তের হাজার তিন’শ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে, চলতি বছর উৎপাদন বেড়ে তের হাজার ছয়’শ হেক্টর হয়েছে।