ঢাকা: সহিংসতার কারণে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলোতে স্ব-আরোপিত সেন্সরশিপ বাড়ছে। বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার (আরএসএফ) বাংলাদেশ নিয়ে এই মন্তব্য করেছে। বুধবার বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা সূচক ২০১৮ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। সূচকের পাশাপাশি একটি দীর্ঘ প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অধ্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের কড়া সমালোচনা করেছে আরএসএফ।
বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘২০১৭ সালে কমপক্ষে ২৫ জন সাংবাদিক, কয়েকশ’ ব্লগার ও ফেসবুক ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে আইসিটি আইনের অধীনে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এই আইনে মানহানিকর বা ধর্মের প্রতি অবমাননাকর বলে বিবেচিত তথ্য অনলাইনে পোস্ট করার বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।’
আরএসএফ’র সূচকে গত বছরের এবারও বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৬ তম।
প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অধ্যায়ে আরও বলা হয়, ‘এই (আইসিটি) আইন সংশোধনের বদলে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০১৮ সালের গোড়ার দিকে নতুন একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রস্তাব তোলে। এই আইনের অনেক ধারাই অ¯পষ্ট, যার ফলে ভিন্নমতালম্বীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোরভাবে দমনপীড়ন চালাতে পারবে কর্তৃপক্ষ।’
এতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ হলেও, দেশটিতে সংবিধান বা ইসলামের সমালোচনা করাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।’ রিপোর্টে বলা হয়, ‘যেসব সাংবাদিক ও ব্লগার উপর্যুক্ত বিষয়ের ওপর সেন্সরশিপ ও স্ব-আরোপিত সেন্সরশিপ অমান্য করার চেষ্টা করেন, তাদের আজীবন কারাদ- কিংবা মৃত্যুদ-ে দ-িত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। অপরদিকে জঙ্গিরা প্রায়ই স্পষ্টবাদী সেকুলারপন্থী ব্লগার ও লেখকদেরকে অনলাইনে হত্যার ডাক দিয়ে থাকে।’
এতে বলা হয়, ‘সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের ওপর সহিংসতার ফলে দেশটিতে স্ব-আরোপিত মিডিয়া সেন্সরশিপ বাড়ছে।’
আরএসএফ’র সূচক অনুযায়ী, বাংলাদেশের চেয়ে মিয়ানমার, ভারত ও পাকিস্তানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আরও ভালো। সূচকে এই তিন দেশ যথাক্রমে ১৩৭, ১৩৮ ও ১৩৯ তম স্থান দখল করেছে।