এই রোগ হলে অখাদ্য খাওয়ার প্রতি আসক্তি জন্মায় মানুষের। মাঝেমধ্যেই কিছু অদ্ভুত অসুখের খবর শোনা যায়। কেউ দিনের পর দিন ছুরি-কাঁচি খেয়ে বিরাট বিপদ বাঁধিয়েছে। আবার কেউ সকলের অজান্তে খেয়ে চলেছে চুল। আরও সব বিচিত্র খাদ্যাভ্যাসের কথাও অজানা নয়।
কিন্তু কেন এমন অদ্ভুত খাদ্যাভ্যাস গড়ে ওঠে এদের মধ্যে? রসগোল্লা-কালিয়া-পোলাও ফেলে কেন অখাদ্য-কুখাদ্য খাওয়ার ঝোঁক চেপে বসে মনের মধ্যে? আসলে এটা একটা রোগ, যার নাম পাইকা। পাইকা ডিজঅর্ডার নামেই একে চিহ্নিত করেছেন চিকিৎসকরা। ম্যাগপাই নামে এক ধরনের পাখি রয়েছে, যে যা খুশি খেয়ে বেড়ায়। এর ল্যাটিন নাম পাইকা। সেখান থেকেই এই অসুখের নামকরণ।
ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ১ থেকে ৬ বছরের শিশু, গর্ভবতী মহিলা ও স্মৃতিভ্রষ্ট মানুষদের মধ্যে বিরল এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি।
ঠিক কী কারণে এই বিচিত্র অসুখ হয়??সবচেয়ে বড় যে কারণটির কথা জানা যাচ্ছে, তা হল মানসিক চাপ। অতিরিক্ত ভয়, শৈশবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, মা-বাবার বিচ্ছেদ জাতীয় মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হলে এই ধরনের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। দারিদ্রের কারণে শরীরে ধাতুর অভাব হওয়াটাও একটা বড় কারণ।
পাইকায় আক্রান্ত রোগী ধুলো, মাটি, চক, কাগজ, আঠা, চুল, টুথপেস্ট, সিগারেটের ছাই, টিকটিকি, পোকামাকড়— ইত্যাদি অখাদ্য খাওয়ার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে। এমনকী, মলমূত্রও যুক্ত হতে পারে খাদ্য তালিকায়।
এই রোগ যদিও সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য। তবে তা রোগী থেকে রোগীতে ভিন্ন হতে পারে। তবে চিকিৎসকরা কাউন্সেলিং ও ওষুধ প্রয়োগে রোগটিকে পুরোপুরি নির্মূল করে দিতে পারেন।