স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, উন্নয়ন ও শান্তি পরস্পরের পরিপূরক। তিনি বলেন, উন্নয়ন ব্যতীত শান্তি আসবে না আর শান্তি ব্যতীত কোনো উন্নয়ন হতে পারে না।
স্বারষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার জাতিসংঘে ‘শান্তি বিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি’ বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের এক সভায় বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।
তিনি এ সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধিত্ব করছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি মিরোস্লাভ লাইচ্যাকের আহ্বানে উচ্চপর্যায়ের এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। রোহিঙ্গ প্রসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি তুলে ধরেন।
আসাদুজ্জামান খান জানান, শেখ হাসিনা বলেছেন, যদি ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারি, তবে ১০ লাখ অসহায় রোহিঙ্গাকেও খাওয়াতে পারবো, প্রয়োজনে খাবার ভাগ করে খাবো।
আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, টেকসই শান্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘স্থায়ী শান্তি বিনির্মাণে সরকার দারিদ্র্যমোচন, মানব উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। যুদ্ধ ও সহিংসতার পরিবর্তে মানুষের মনে শান্তির সংস্কৃতি প্রোথিত করতে আগামী দিনগুলোতে অনুসৃত ‘কালচার অব পিস’ পদক্ষেপের পাশাপাশি টেকসই শান্তি এজেন্ডাকেও এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সন্ত্রাস দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী কোন দেশের বিরুদ্ধে যাতে কেউ ভূখন্ড ব্যবহার করতে না পারে সে বিষয়ে বাংলাদেশ সর্বদা সতর্ক রয়েছে। মৌলবাদ ও সহিংস চরমপন্থা দমনে সবসময়ই স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নিবিড় অংশগ্রহণকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি বিশ্বস্ত অংশীদার উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বেসামরিক জনগণের সুরক্ষা প্রদানসহ সমস্যাসংকুল জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গত তিনদশক ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সামর্থ্য ও পেশাদারিত্বের সর্বোচ্চ ব্যবহার করছে। সংঘাতময় পরিস্থিতিতে যৌন সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সবসময়ই উচ্চকণ্ঠ। উন্নয়ন ও মানবিক সহায়তা খাতের অর্থ বরাদ্দ না কমিয়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বর্ধিত এবং অর্থায়ন নিশ্চিতে তিনি আহ্বান জানান।
বেলজিয়ামের রাজা, কলম্বিয়া, আয়ারল্যান্ড, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক ও গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট, এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী, জর্জিয়া ও ক্রোশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী, ৪০টিরও বেশি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অন্যান্য দেশের মন্ত্রী, উপমন্ত্রীসহ ১৩১টি দেশ ও সংস্থার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এ সভায় অংশগ্রহণ করেন।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।