যশোরের মণিরামপুরে বাজিতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাদেব বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আনা যৌন নির্যাতনের অভিযোগের তদন্ত হয়েছে। সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পলাশ কান্তি হালদার ও নম্র কুমার মন্ডল সোমবার স্কুল ক্যাম্পাসে উপস্থিত থেকে এই তদন্ত করেন। তবে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আগেই নির্যাতিতা শিশুকে স্কুল থেকে ছাড়পত্র দিয়ে তাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বিবিজিএইচএস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহাদেব বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একই স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির এক ছাত্রী যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তোলে। ওই ছাত্রীর অভিযোগ ছিল, গত ৪ এপ্রিল বিকেলে প্রাইভেট পড়ানো শেষে মহাদেব তাকে একা স্কুলে রেখে জোর পূর্বক শ্লীলতাহানি করে। বাড়িতে ফিরে ঘটনা সে তার মাকে জানায়।
এদিকে শিশু ছাত্রীর নির্যাতনের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক মহাদেব ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। তিনি উল্টো ওই ছাত্রীকে স্কুল ত্যাগের ছাড়পত্র দিয়ে কমিটির সভাপতি মানব সরকারকে ছাত্রীর বাড়িতে পাঠান। ছাত্রীর মা জানান, তিনি তার মেয়ের লেখাপড়া চালু রাখার জন্য নিরূপায় হয়ে ওই ছাড়পত্র নিয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরের রোজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করান। সোমবার ওই ছাত্রীর ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। এদিন সে তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে যৌন নির্যাতনের বর্ণনা দেয়ার পর পরীক্ষা দিতে স্কুলে চলে যায়।
এদিকে তদন্তে প্রধান শিক্ষকের পক্ষে কমিটির সভাপতিসহ অনেকের স্বাক্ষরিত একটি রেজুলেশন কপি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এতে দাবি করা হয়েছে ঘটনার বিষয়ে সত্যতা নেই। তদন্তকারী কর্মকর্তা এ তথ্যর কথা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার পক্ষে ও বিপক্ষে অনেকে তার কাছে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। তা পর্যালোচনা করে তদন্ত রিপোর্ট দেয়া হবে।
অন্যদিকে নির্যাতিত ওই ছাত্রীর কয়েকজন অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষককের বিরুদ্ধে দাফতরিক বিচার পেতে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ও শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হলেও আইনত বিচার পেতে তারা দুই এক দিনের মধ্যে থানা বা আদালতের আশ্রয় গ্রহণ করবেন। ছাত্রীর স্কুল শিক্ষিকা বোন বলেন, মহাদেব বিশ্বাস ইতোপূর্বে আরো ২ জন শিশু ছাত্রীর সঙ্গে একই ধরনের যৌন নির্যাতন করেছেন। তিনি এক শিক্ষিকার সঙ্গে অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারণ করে সেই ভিডিও শিশু ছাত্রীদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেখিয়ে তার সঙ্গে অনৈতিক কাজ করার চেষ্টা চালান।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মহাদেব বিশ্বাস দাবি করেন, ঘটনার দিন ওই ছাত্রী তার স্কুলে আসেনি। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা। তবে ওই শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র দেয়ার কথা তিনি স্বীকার করেছেন।