আগামী ১১ ও ১২ মে হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতেও আন্দোলন সংগ্রামে সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করার ক্ষেত্রে তৎকালীন ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল প্রণিধানযোগ্য। বাংলাদেশ সৃষ্টির পরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগের ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষ করে, রাজপথের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের আন্দোলন সংগ্রামের জ্বালান অনেকাংশেই ছাত্রলীগের মাধ্যমেই আসে। মূলত সম্মেলনের মাধ্যমেই সংগঠনে নতুন নেতৃত্ব আসে। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও সঠিক সময়ে সম্মেলনের মাধ্যমে বর্তমান কমিটি দায়িত্ব হস্তান্তর করেনি। যার ফলে পদ প্রত্যাশী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়
সর্বশেষ গত ৩১ মার্চ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ছাত্রলীগের সম্মেলনের বিষয়টি সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সম্মেলনের প্রাথমিক তারিখ ১১ মে ঠিক করে দেয়া হয়। ৫ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের জন্য ১১ ও ১২ মে তারিখ ঘোষণা দেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মাঠে সরব পদ প্রত্যাশীরা। তবে এখনই প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাচ্ছেন না তারা। তবে যাদের ব্যাপারে অভিযোগ আছে তারা যেন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে না পারে দলীয় হাই-কমান্ডের কাছে এমন দাবি সবার।
আসন্ন নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের শীর্ষ পদসহ গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে মেলানো হচ্ছে নানান সমীকরণ। তবে সব সমীকরণ বাদ দিয়ে এবারের সম্মেলনে আঞ্চলিক সমীকরণই প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি নির্বরযোগ্য সূত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সম্মেলনের সাথে জড়িত আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বলছেন, মেধাবী, পরিশ্রমী, ছাত্রদের মাজে জনপ্রিয়, পরিচ্ছন্ন ইমেজ ও সাংগঠনিকভাবে দক্ষ নেতারাই নতুন কমিটিতে স্থান পাবে। টেন্ডারবাজ ও অপকর্মে জড়িতদের নেতৃত্বে আসার সুযোগ নেই।
আগামী বছরের শুরুতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করতে পারবেন এমন পার্থীকেই বেঁচে নেয়া হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগকে ঢেলে সাজাতে চান দলীয় হাই-কমান্ড। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ি ২৯তম জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে ছাত্রলীগে নতুন স্ট্রাকচার আসছে বলে জানান আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আঞ্চলিক সমীকরণে এগিয়ে আছেন যারাঃ আঞ্চলিক সমীকরণে মনে করা হচ্ছে চট্রগ্রাম, বরিশাল, ফরিদপুর ও উত্তরবঙ্গ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদ আসবে।
চট্রগ্রামঃ চট্রগ্রাম বিভাগ থেকে এবার ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ অঞ্চল থেকে দৌঁড়ঝাপে এগিয়ে আছেন বর্তমান কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম, স্কুলছাত্র বিষয়ক উপ-সম্পাদ খাজা খায়ের সুজন, উপ-সম্পাদক সৈয়দ আরাফাত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল ছাত্রলীগের সভাপতি সরকার রায়হান জহির।
বরিশালঃ বরিশাল অঞ্চল থেকে এগিয়ে আছেন বর্তমান কমিটির আইন সম্পাদক আল-নাহিয়ান খান জয়, সহ-সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ, কৃষি শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক বরকত হোসেন হাওলাদার, সহ সম্পাদক সবুর খান, সহ-সভাপতি রুহুল আমিন হাওলাদার ও উপ কৃষি শিক্ষা সম্পাদক আরিফ আলী।
উত্তরবঙ্গঃ কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে উত্তরবঙ্গ থেকে নেতা আসতে পারে। এ অঞ্চল থেকে দৌঁড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান কমিটির উপ-আইন সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা, সদস্য রেজোয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সহ-সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য।
ফরিদপুরঃ শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রব্বানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সভাপতি বিদ্যুৎ শাহরিয়ার কবির, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক রাকিব হোসেন, স্যার এফ রহমান হল সভাপতি হাফিজুর রহমান এবং উপ গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহদাত।
সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলছেন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি রয়েছে সংগঠনে। এ নিয়ে করা হয়েছে বিভিন্ন উপ-কমিটি। দেশরত্ন যাকে চাইবেন সেই নেতৃত্বে আসবে।